বাংলাদেশী ইউটিউবার রাফসান শাহরিয়ারের সফল হওয়ার গল্প
রাফসান শাহরিয়ার একজন বাংলাদেশী ইউটিউবার। জীবনের শুরুটা গেমিং দিয়ে, এখন নিয়মিত দেখা মিলছে মডেলিং ও টিভিসিতে। সম্প্রতি রাফসান নিজের জীবনের গল্প জানিয়েছেন দ্য বাংলাদেশ টুডে কে।
রেস্টুরেন্ট থেকে ইউটিউবে রাফসান শাহরিয়ার
আমি প্রধানত ইউটিউবিং শুরু করি ২০২৩ সালে। চ্যানেলটা তখনই খোলা। একদিন ক্লাস শেষে ঢাকার এক রেস্টুরেন্টে। আমার ছোট ভাই রাফিন আইডিয়াটা দিলো তখনই। সেই মূলত আমাকে সাহস জুগিয়েছে ইউটিউবিং শুরু করতে বলে।
মডেলিং জগতের রাফসান শাহরিয়ার
আমার মডেলিং এর শুরুটা ১ বছর আগে। ২০২৩ সালে দেওয়া ভিডিওতে দেখেই টি-সিরিজের একটি মিউজিক ভিডিওর মডেল হিসেবে নির্বাচন করা হয় আমাকে। শুরুটা এভাবেই। এরপর থেকে বেশ কয়েকটি কোম্পানির মডেল হিসেবে কাজ করছি, এখনো করে যাচ্ছি। মডেলিং এ আসার মূল কারণ অভিজ্ঞতা। আমি জীবনে সবসময় নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করতে ভালোবাসি, মডেলিংটাও ঠিক এভাবেই, অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্যই আসা। আর্থিক কিংবা ফুল টাইম হতে নয়।
অভিনয়ে আরও যা পরিকল্পনা রাফসানের
অবশ্যই বড় পর্দার কাজ করার বেশ ইচ্ছে আছে। বড় পর্দায় কাজ করার অভিজ্ঞতাটাও জীবনে একবার হলেও নিতে চাই।
সবকিছুর পাশাপাশি একজন প্রফেশনাল গেইমারও রাফসান শাহরিয়ার
আমি প্রফেশনালি গেইমিং শুরু করি ২০১৮ সাল থেকেই। বড় ভাই থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে গেইমিং এ আসি। এরপর ধীরে ধীরে ব্যাপারটাকে প্রফেশনালি নিতে শুরু করি। এ পর্যন্ত কতগুলো গেইমিং টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছি নিজের কাছেই সঠিক তালিকা নেই। ২০১৯ সাল থেকেই আমি যেকোনো টুর্নামেন্টে অপরাজিত। টুর্নামেন্টে অংশ নিতে দেশের বাইরে গিয়েছি ৩ বার। সত্যি বলতে গেইমিং প্রফেশনটা আমাদের দেশের অধিকাংশের চোখে হাস্যকর। এটাও কিন্তু হতে পারে একটি পেশা। আমি আমাদের পাশের দেশ ভারতে গিয়েছি, সেখানে ১১, ১৩ বছরের ছেলেরা গেইমিং এ মাসে লাখের কাছাকাছি আয় করছে। এটাও কিন্তু একটি পেশা, সেটি অনেকের ধারণায় নেই বিশেষ করে আমাদের দেশের এটি একদমই নেই। আমাদের দেশের অনেকেই গেইমিং এ বেশ আগ্রহী শুধুমাত্র পরিবারের দ্বিমতে নিজেকে গড়ে তুলতে পারছেনা। আশা করি এই দৃষ্টিভঙ্গি বদলাবে শীঘ্রই।
গেইমিং এ আপনার পরিবারের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন ছিলো?
হ্যাঁ, আমার পরিবারও এই ব্যাপারটিকে সমর্থন করতো না একদমই। তবে পরে তারা যখন দেখলো এবং সব বুঝতে পারলো তারা ব্যাপারটিকে ভালোভাবেই নিতে শুরু করেছে। তারাই এখন আমাকে সমর্থন করে যাচ্ছে সবসময় আমার আগ্রহকে প্রাধান্য দিচ্ছে
আগামীতে আরও যা পরিকল্পনা রাফসানের
নিজেকে আন্তর্জাতিক মানের ইউটিউবার হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। অবশ্য এই মাসেই সব হওয়ার কথা ছিলো। এই মাসেই আমার দেশের বাইরে তিনটি দেশের ইউটিউবারদের সাথে কাজ করার কথা ছিল, শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকার কারণে সবকিছু বাতিল করতে হলো। তবে শরীর ঠিক হলেই বিষয়টি বাস্তবায়ন করবো। অনেকেই আমাকে বলে আমি ভিডিওতে অধিকাংশ সময় ইংরেজি কেনো বলি, এর কারণ আমি চাই আমার ভিডিও বাইরের দেশের দর্শকরাও বুঝতে পারুক। তারাও আমাদের খাওয়া-দাওয়া, পরিবেশ নিয়ে আগ্রহী হোক। সবসময় নিজের আলাদা একটি স্টাইল তৈরি করতে চেষ্টা করি।
অল্প সময়েই কোটির অধিক ভিউ রাফসানের ইউটিউব চ্যানেলে
বিষয়টা আমাকে অনেক অনুপ্রাণিত করে। এত অল্প সময়ের ব্যবধানে এত সমর্থন সত্যিই আমাকে সামনের দিকে নিজেকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সাহস জোগায়। আমি সকলের কাছেই সবসময় কৃতজ্ঞ যারা আমাকে এই পর্যন্ত এনে দিয়েছেন। আশা করি আরও ভালো ভালো কাজের মাধ্যমে নিজেকে তথা পুরো দেশটাকে বিশ্বের কাছে অন্যভাবে তুলে ধরতে পারবো।