কক্সবাজারে ইয়াবা চালান মামলার রায়, ৩ জনের যাবজ্জীবন

সফিউল আলম, কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজারে পুলিশের অভিযানে সর্ববৃহৎ ইয়াবা চালান (১৪ লাখ ইয়াবা) ও ১ কোটি ৭০ লাখ ৬৮ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার মামলায় ৩ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছে আদালত। একইসঙ্গে মামলায় অভিযুক্ত হলে সাজাপ্রাপ্তদের একজনের পুত্র হওয়ায় খালাস পেয়েছেন একজন। সাজাপ্রাপ্ত ৩ জনকে ৫ লাখ টাকা করে ১৫ লাখ টাকা জরিমানাও প্রদান করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে কক্সবাজার জেলা দায়রা ও জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল এ রায় ঘোষণা করেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারি পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) দীলিপ কুমার ধর।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, কক্সবাজার পৌরসভার নুনিয়ারছড়া এলাকার মো. নজরুল ইসলামের ছেলে জহুরুল ইসলাম ফারুক, তার শ্বশুর একই এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে আবুল কালাম, একই এলাকার মোজাফফর আহমদের ছেলে নুরুল আমিন বাবু।
খালাস পেয়েছেন সাজাপ্রাপ্ত আবুল কালামের ছেলে শেখ আবদুল্লাহ।
সহকারি পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) দীলিপ কুমার ধর জানিয়েছেন, ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার সদরের খুরুশকুল-চৌফলদন্ডী ব্রিজের পাশের খালে নোঙর করা নৌকা থেকে ১৪ লাখ ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয় ৪ জনকে। পরে তাদের দেয়া তথ্য মতে ফারুকের শহরের নুনিয়ার ছড়া বাড়ি থেকে ১ কোটি ৭০ লাখ ৬৮ হাজার ৫০০ টাকা জব্দ করেছে পুলিশ।
কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বাদি হয়ে অভিযানের পরের দিন মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটির তদন্ত করেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মো. আজহারুল ইসলাম। তিনি মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা হয় ওই বছরের ৩ জুন। আদালত অভিযোগ পত্র গ্রহণ করে কারাগারে থাকা ৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠণ করে বিচার শুরু করে। এ ২ বছরের মধ্যে মামলার বাদি ও তদন্তকারি কর্মকর্তাসহ ৩২ জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ১৫ মার্চ রায় ঘোষণার দিন ধার্য্য করেছিলেন। কিন্তু আদালত নানা কারণে একদিন পিছয়ে বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) এ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী জানান, মুলত আদালত তার পর্যাবেক্ষণে বলেছেন খালাস পাওয়া আবদুল্লাহ বয়সে কম হলেও অভিযুক্তদের একজন। তার পিতা সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় মানবিক বিবেচনায় আবদুল্লাহকে খালাস দেয়া হয়। এই মামলায় সাক্ষিরা ঘটনার সময় কয়েকজন পালিয়ে যাওয়ার কথা বললেও তাদের শনাক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ।
আদালত বলেছেন, মাদক মামলায় পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তি ও নেপথ্যের গডফাদারদের শনাক্ত করা জরুরী। রায় প্রদানকালে ৪ জন এবং মামলার বাদি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এপিপি জানান, পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) বর্তমানে ঢাকায় রয়েছেন। পিপি ফিরলে একজন খালাস পাওয়ার বিষয়টি আলোচনা করে আপীল করা হতে পারে।
মামলার বাদি বর্তমানে উখিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, এ মামলাটি খুব গুরুত্বপূর্ণ মামলা। এখানে একজন খালাস পাওয়ার কথা না। বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর সাথে আলাপ করে উচ্চ আদালতে আপীল করা হবে।