‘প্রেসক্লাবে অনেক লোক আছে যারা কলম চালাতে জানে না’

প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ বলেছেন, সিন্ডিকেট রিপোর্ট সাংবাদিকতার জন্য খারাপ। ঢাকার সাংবাদিকতার মান খুবই নিন্ম। একজন একটা রিপোর্ট করলে ওই একই রিপোর্ট আরও তিন চারজন করে। ফলে সিন্ডিকেট সাংবাদিকতা তৈরি হয়েছে।
শনিবার (১৮ মার্চ) দুপুর দুইটায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রে এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে 'তারুণ্যের বোঝাপড়ায় বাংলাদেশের সাংবাদিকতা' শীর্ষক এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিআইবি'র মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।
পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ বলেন, আমাদের দেশে প্রেসক্লাবে অনেক লোক আছে যারা কলম চালাতে জানে না। আমরা অনেক মিডিয়া তৈরি করেছি কিন্তু সাংবাদিক তৈরি করতে পারিনি। আমরা প্রেস ইন্সটিটিউট নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছি কিন্তু সাংবাদিকরা সেভাবে কাজ করে না। আবার অনেক জেলার সাংবাদিক আছে যারা প্রশিক্ষণ নিয়ে খুবই ভালো কাজ করে।
এসময় তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক দম্পতি সাগর ও রুনি হত্যার পর আজ পর্যন্ত কোনো অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করেনি। সাংবাদিকেরা পুলিশ কী করছে সেদিকে তাকিয়ে আছে। আমাদের সাংবাদিকতার ইতিহাসে এটা কলঙ্ক হয়ে থাকবে।’
জাফর ওয়াজেদ বলেন, ‘আমরা অনেক মিডিয়া তৈরি করেছি কিন্তু সাংবাদিক তৈরি করতে পারিনি। প্রেস ইন্সটিটিউট নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছি কিন্তু সাংবাদিকরা সেভাবে কাজ করে না। ঢাকার সাংবাদিকের এগুলো চাই না৷ আবার অনেক জেলার সাংবাদিক আছে যারা প্রশিক্ষণ নিয়ে খুবই ভালো কাজ করে। ঢাকার সাংবাদিকতার মান খুবই নিম্ন। একজন একটা রিপোর্ট করলে ওই একই রিপোর্ট আরো তিন চারজন করে। ফলে সিন্ডিকেট সাংবাদিকতা তৈরি হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগ রয়েছে। কিন্তু সাংবাদিকতার মান বাড়েনি৷ আমাদের দেশে এখন অজস্র গণমাধ্যম কিন্তু এমন কোনো রিপোর্টার নেই যার রিপোর্ট পড়ার জন্য পাঠক অপেক্ষায় থাকে। আর বর্তমানে প্রযুক্তির এমন বিকাশ ঘটেছে যে এই সাংবাদিকতা কোথায় গিয়ে দাড়াবে এখনই স্পষ্ট বলা যাচ্ছে না।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. এনামুর রহমান বলেন, ‘সাংবাদিকতা হচ্ছে গণতন্ত্রের স্তম্ভ। সাংবাদিকদের সংবাদের ভিত্তিতে সরকার রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। সাংবাদিকরা আছেন বলেনই সত্য উদঘাটিত হয়ে ন্যায় বিচার পেতে পাওয়া যায়। বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ বলেই সাংবাদিকেরা এখানে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে।'
আলোচনাসভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম, উপ উপাচার্য অধ্যাপক শেখ মনজুরুল হকসহ অন্যান্য শিক্ষক ও জাবিসাসের সাবেক নেতৃবৃন্দরা।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) জাবিসাসের সূবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে কেক কাটা হয়। পরে বেলা ১১টায় টিএসসি থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রে এসে শেষ হয়।