চিলমারীতে বকেয়া মজুরীর দাবিতে শ্রমিকদের অবস্থান

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের চিলমারীতে কর্মসৃজন কর্মসূচী (ইজিপিপি) প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার ২মাস পেরিয়ে গেলেও শ্রমিকরা বেতন না পাওয়া অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন মজুরী না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে তারা।বকেয়া মজুরীর দাবীতে সোমবার উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থান নেয় নিরুপায় হতদরিদ্র ওই শ্রমিকরা।
জানা গেছে, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস এর বাস্তবায়নে প্রথম পর্যায়ে কর্মসৃজন কর্মসূচি (ইজিপিপি)প্রকল্পের ৪০দিনের কাজ শেষ হয় গত ১৮জানুয়ারী। ইতোমধ্যে ২য় পর্যায়ের কাজও শুরু হয়েছে। প্রথম পর্যায়ের কাজ ২মাস আগে শেষ হলেও ৬ইউনিয়নের ১হাজার ৮৫২জন শ্রমিক ২৫দিনের মজুরি এখনও পায়নি।এদের মধ্যে রানীগঞ্জ ইউনিয়নে ২৬১জন,নয়ারহাট ইউনিয়নের ২৯৩ জন,থানাহাট ইউনিয়নের ৩৯০জন,রমনা ইউনিয়নের ৩০৩জন,চিলমারী ইউনিয়নের ১৬৩জন ও অষ্টমীরচর ইউনিয়নের ৪৪২জন শ্রমিক জনপ্রতি দৈনিক হাজিরা হিসাবে ৪শত টাকা হারে ২৫দিনের মোট ১০হাজার টাকা করে না পাওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে তারা।
নিরুপায় হয়ে বকেয়া মজুরীর দাবীতে শ্রমিকরা সোমবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরের সামনে অবস্থান নেয়।
এসময় শ্রমিকরা জানান,তারা সপ্তাহে পাঁচ দিন কাজ করেছেন।প্রতি বৃহস্পতিবার এক সপ্তাহের কাজের বিল একসঙ্গে দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি।পুরো ৪০দিন কাজ শেষ হলে মাত্র ১৫দিনের কাজের বিল দেওয়া হয় তাদের। এরপর দীর্ঘ দুই মাস পেরিয়ে গেলেও বাকি বিল দেওয়া হচ্ছেনা। মাটি কাটার মতো কষ্টকর কাজ করেও বিল না পাওয়াটা খুবই দুঃখজনক বলে জানান তারা।
কর্মসৃজন কাজের শ্রমিক আমেছা বেগম দুঃখ করে বলেন,হামার কষ্ট কেডা বোঝে,কাজ করি নেওয়ার কতদিন হয় ট্যাকা দেয়ার নাম নাই বাহে,তাতে রমজান মাস,কেমনে চলি কনতো? মাচাবান্দা এলাকার শ্রমিক ফুলমতি বেগম জানান,আমরা দিন আনি দিন খাই।সপ্তাহে পাঁচ দিন হিসাবে ৪০দিনের কাজে প্রায় দুই মাস লেগেছে।এ সময়ে অন্য কোনো কাজও করতে পারিনি।ধার দেনা করে,দোকানে বাকি রেখে খাওয়া-পরা চালিয়েছি।এখন সবাই টাকা চাচ্ছে।কিন্তু বিল না পেয়ে তাদের টাকা দিতে না পারায় খুব বিপদে আছি।
পিআইও অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান জানান,শ্রমিকদের বিল উপস্থাপনে কালক্ষেপন হওয়ায় বিলে সামান্য সমস্যা হয়েছে।এক সপ্তাহের মধ্যে তারা বিল পাবে বলে তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন,বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে আশা করি শ্রমিকরা দ্রুত তাদের মজুরি পাবে।