আড়াই বছরের কন্যা শিশুকে দ্বি-খন্ডিত করে হত্যা করেছে আপন চাচি
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামে দুলালী খাতুন দিশা নামে আড়াই বছরের এক কন্যা শিশুকে তরকারি কাটার বটি দিয়ে দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার আপন চাচির বিরুদ্ধে। ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত ওই নারী কামনাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এমন ফুটফুটে নিষ্পাপ শিশুকে হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি পরিবারসহ এলাকাবাসীর। আর তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানায় পুলিশ।
আড়াই বছরের ফুটফুটে কন্যা সন্তান দিশাকে হারিয়ে বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন বাবা-মাসহ পরিবারের অন্যন্য সদস্যরা। কান্না আর আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে বাতাস। নিষ্পাপ শিশুকে এমন নির্মমভাবে হত্যার কথা শুনে ছুটে এসেছেন শত শত মানুষ।
কুড়িগ্রাম সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের ছত্রপুর মাষ্টার পাড়া গ্রামে মঙ্গলবার দুপুরে নিজ বাড়িতে নিজ ঘরে হত্যাকান্ডের শিকার হয় শিশু দিশা। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে ঘরের ভিতর তরকারি কাটার বটি দিয়ে দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে বাইরে থেকে দরজার শিকল লাগিয়ে পালিয়ে যায় খুনি চাচি। পরে শিশুটির মা বাড়িতে এসে শিকল খুলে দরজা খুলতেই সন্তানের দ্বি-খন্ডিত লাশ দেখে চিৎকার দিলে ছুটে আসে প্রতিবেশীরা। পরে খবর পেয়ে মরদেহ নিয়ে যায় পুলিশ। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে শিশুর মা, স্বজনসহ স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, তারা চিৎকার শুনে বাড়িতে এসে ঘরের ভিতর শিশুর দ্বি-খন্ডিত মরদেহ মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন। পাশে রক্ত ও রক্তমাখা তরকারি কাটার বটিও দেখতে পান। পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে লাশ নিয়ে যায়। নিষ্পাপ শিশুকে হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।
নিহত শিশুর মা শাবনুর জানান, নদীতে গোসল করিয়ে মেয়েকে বাড়িতে পাঠান তিনি। পরে বাড়িতে কোন সারা শব্দ না পেয়ে বাড়ির আশেপাশে খোঁজার পর ঘরের শিকল খুলে দরজা খুলতেই সন্তানের মাথা বিচ্ছিন্ন মরদেহ দেখে চিৎকার দেন। তিনি জানান, বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে তার বড় ভাসুরের স্ত্রী কামনা বেগম এ ঘটনা ঘটিয়ে বাইরে থেকে দরজায় শিকল দিয়ে পালিয়ে গেছে। কেন না এ সময় কামনা ছাড়া বাড়িতে আর কেউ ছিল না। হত্যাকারীর ফাঁসির দাবি জানান নিহত শিশুর মা শাবনুর।
কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদ্য পুলিশ সুপারে পদন্নতিপ্রাপ্ত) রুহুল আমিন জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর একই বাড়িতে বসবাসকারী নিহত শিশুর বড় চাচি সাইদুরের স্ত্রী কামনা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া নারী মানসিক ভারসাম্যহীন কি না তা ডাক্তারী পরীক্ষার পর তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। গ্রেফতারের সময় নারীর ব্যবহৃত রক্ত মাখা জামা-কাপড় উদ্ধারের কথা জানান তিনি।
সদর উপজেলার মাষ্টার পাড়া গ্রামের দুলাল-শাবনুর দম্পতির একমাত্র কন্যা সন্তান ছিল দিশা। আর গ্রেফতারকৃত নারী দুলালের আপন বড় ভাই সাইদুরের স্ত্রী কামনা বেগম।