ই-অরেঞ্জের সোহেলকে ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া মেহজাবীনের ভাই বরখাস্ত পুলিশ পরিদর্শক শেখ সোহেল রানাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়ার বিষয়ে পদক্ষেপ জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
পাশাপাশি ই-অরেঞ্জের লেনদেনের বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে কি না, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) তা জানাতে বলা হয়েছে।
রোববার (২৯ জানুয়ারি) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আজ রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. আব্দুল কাইয়ুম লিটন। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) পক্ষে ছিলেন শামীম খালেদ আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একে এম আমিন উদ্দিন মানিক। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন এ কে এম ফজলুল হক।
এর আগে গত ৩ নভেম্বরও এ ব্যাপারে পদক্ষেপ জানতে চেয়ে আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। কিন্তু তিন মাসেও কিছু জানাতে পারেনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর মাঝে একবার দুই সপ্তাহ সময় নেওয়া হয়। এরপরও পদক্ষেপ জানাতে না পারায় আজ উষ্মা প্রকাশ করে ফের একই আদেশ দেন উচ্চ আদালত।
আদেশে বরখাস্ত হওয়া এ পুলিশ কর্মকর্তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ এবং ই-অরেঞ্জের লেনদেনের বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে কি না তা জানাতে স্বরাষ্ট্র সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যানকে দুই সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে।
ই-অরেঞ্জ থেকে ৭৭ কোটি টাকার পণ্য কিনে প্রতারণার শিকার ৫৪৭ জন গ্রাহকের পক্ষে মো. আফজাল হোসেন, মো. আরাফাত আলী, মো. তরিকুল আলম, সাকিবুল ইসলাম, রানা খান ও মো. হাবিবুল্লাহ জাহিদ নামে ছয়জন গ্রাহক গত বছর মার্চে হাইকোর্টে রিট করেন।
ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন ও তার ভাই সোহেল রানা, বিথি আক্তারসহ ই-অরেঞ্জের সঙ্গে সম্পৃক্তদের ব্যাংকসহ কার কোথায় কত ব্যক্তিগত সম্পদ আছে তা তদন্তে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) দক্ষ কর্মকর্তাদের দিয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশনাসহ রুল চাওয়া হয় রিটে।
সে রিটের প্রাথমিক শুনানির পর ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে গ্রাহক ঠকানো, টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। দুদক, বিএফআইইউ ও সিআইডিকে চার মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
সেই সঙ্গে গ্রাহক নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় ই-অরেঞ্জের সঙ্গে সম্পৃক্ত বনানী থানার বরখাস্ত পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা, সোনিয়া মেহজাবিন ও বিথি আক্তারসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ব-বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
সোহেল রানা, সোনিয়া মেহজাবিন ও বিথি আক্তারসহ সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করে ক্ষতি অনুপাতে রিট আবেদনকারীসহ প্রতারিত অন্যান্য গ্রাহকদের মাঝে সে টাকা বণ্টন বা বিতরণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়।
বাণিজ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, দুদক চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বিএফআইউর প্রধান, সোহেল রানা, সোনিয়া মেহজাবিন ও বিথি আক্তারকে রুলের জবাব দিতে বলেন আদালত।