ব্রাহ্মণপাড়ায় মসজিদের ভেতরে দুই তরুণকে ছুরিকাঘাত

কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি: পূর্ববিরোধের জের ধরে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার একটি মসজিদের ভেতরে দুই তরুণকে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে পরে ছুরিকাঘাত করার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত ওই দুই তরুণকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়েছে।
সোমবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যায় উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের রানীগাছ গ্রামের কেন্দ্রীয় মসজিদের ভেতরে ঘটনাটি ঘটেছে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সকালে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
আহতরা হলেন- ওই গ্রামের মৃত আবু হাফিনের ছেলে মো.আব্দুল্লাহ আল রাজী ও তার চাচাতো ভাই গোলাম মোস্তফার ছেলে মাহাথির মৃধা ওরফে জামিল।
অভিযুক্তরা হলেন- একই গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে বাচ্চু মিয়া, জামাল মিয়া এবং বাচ্চুর ছেলে সাখাওয়াত হোসেনসহ আরও কয়েকজন।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও আহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আব্দুল্লাহ আল রাজী ও তার চাচাতো ভাই মাহাথির গতকাল সোমবার ইফতারের পর মাগরিবের নামাজ আদায় করতে তাদের বাড়ির সামনে অবস্থিত মসজিদে যায়। এ সময় নামাজ আদায়রত অবস্থায় মসজিদের ভেতরেই রামদা, ছুরি ও লাঠিসোটা নিয়ে ওই দুই তরুণের উপর হামলা চালায় অভিযুক্তরা। হামলাকারীরা ওই দুই তরুণকে এলোপাথাড়ি পেটাতে থাকে। এক পর্যায়ে আব্দুল্লাহ আল রাজীর পিঠে এবং মাহাথিরের পায়ে ছুরিকাঘাত করে তারা। অভিযুক্তরা বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে তাদেরকে প্রাণে মেরে ফেলবে বলে চলে যাওয়ার সময় প্রকাশ্যে হুমকি দেয় হামলাকারীরা।
সোমবার দুপুরে আহত আব্দুল্লাহ আল রাজীর ভাই আল বাকি বলেন, ঘটনার আগের দিন ২৬ মার্চ বিকেলেও পূর্ব বিরোধের জের ধরে ওই সন্ত্রাসীরা আহতদের সঙ্গে মসজিদের সামনে কথা-কাটাকাটিতে জড়িয়ে তাদেরকে মারধর করে। এক পর্যায়ে তারা আমাদের বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। পরে আমরা বিষয়টি এলাকার বিশিষ্টজনদেরকে জানাই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাদেরকে হত্যার উদ্দেশ্যে মসজিদের ভেতরে হামলা চালানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, আমাদের বাড়ির সামনে অবস্থিত মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা আমার দাদা প্রয়াত আবদুস সামাদ মাস্টার। তবে বেশ কয়েক বছর ধরে অভিযুক্তরা মসজিদে নিজেদের কর্তৃত্ব দেখাতে চায়। আমাদের বাড়ি পাশাপাশি হওয়ায় তাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বেশ আগে থেকেই বিরোধ চলে আসছিলো। এরই মধ্যে রমজান আসায় প্রতিদিন রাত ২টায় মসজিদের মাইকে মুসল্লীদের সেহরি খেতে ডাকা শুরু হয়। এভাবে ভোর ৪টা পর্যন্ত মাইকে ডাকাডাকির কারণে অনেকের সমস্যা হয়। আমার ভাই মো. আব্দুল্লাহ আল রাজী অসুস্থ। সে মসজিদের পাশের একটি ঘরে থাকার কারণে মাইকের শব্দে ঘুমাতে পারে না। বিষয়টি সবার জন্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে গত ২৬ মার্চ সকালে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয় সে। বর্তমানে অন্য কিছু না পেয়ে এই বিষয়টিকেই সামনে এনে আমার ভাইদের ওপর দুই দফা হামলা চালিয়েছে ওই অভিযুক্তরা।
আল বাকি বলেন, ইতোমধ্যে আমার ভাই আহত আব্দুল্লাহ আল রাজী ঘটনাটি নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। আমরা অভিযুক্তদের বিচার চাই। তারা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে অভিযুক্তদের সঙ্গে একাধিবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সোমবার দুপুরে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, এ ঘটনায় আহতদের একজন বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনার তদন্তে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে।
জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।