চৌগাছা হাসপাতালে ডাক্তার-কর্মচারীকে মারপিট, প্রতিবাদে মানববন্ধন ও কর্মবিরতি পালন
চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি: যশোরের চৌগাছা হাসপাতালে রোগীর অভিভাবক কর্তৃক ডাক্তার-নার্স মারপিটের ঘটনায় হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীরা মানববন্ধন ও কর্মবিরতি পালন করেছে। মঙ্গলবার সকালে চৌগাছা-যশোর সড়ক সংলগ্ন হাসপাতালের সামনে এই মানববন্ধন ও কর্মবিরতি অনুষ্ঠিত হয়।
জানা গেছে, সোমবার পৌরসভার বিশ্বাস পাড়ার এখতিয়ারের তিন বছরের শিশুকন্যা ইসরাত জাহানের নাকের ভিতর কুলের বিচি ঢুকে যায়। পরিবারের লোকজন বুঝতে পেরে এ দিন রাতে চিকিৎসার জন্য শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের জরুরী বিভাগে স্বেচ্ছাসেবী এক কর্মচারী নাক থেকে কুলের বিচি বের করার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হলে শিশুটি কান্নাকাটি শুরু করে। রক্তক্ষরণকে কেন্দ্র করে জরুরী বিভাগে উপস্থিত উপ-স্বাস্থ্য সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডাঃ আশরাফুন্নাহার ও জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত ডাঃ সোহাগ হোসেনের সাথে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শিশুটির পিতা তাদের উপর চড়াও হওয়ার পাশাপাশি দুই চিকিৎসককে ধাক্কা দিয়ে লাঞ্চিত করেন। এ ঘটনায় ফাহিম নামের এক কর্মচারী প্রতিবাদ করলে তাকেও লাঞ্চিত করা হয়।
এ ঘটনায় ডাঃ সোহাগ হোসেন এখতিয়ারের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করেন। মামলা নং-২৭। মামলার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সকালে বিশ্বাসপাড়া থেকে থানা পুলিশ এখতিয়ারকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করে।
হাসপাতালে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালের পক্ষ থেকে মানববন্ধন ও কর্মবিরতি কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। প্রায় ঘন্টাব্যাপী এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জরুরী চিকিৎসাসেবা ছাড়া হাসপাতালের সকল কার্যক্রম বন্ধ ছিল। কর্মবিরতির ফলে বেশকিছু রোগী ভোগান্তির শিকার হন বলে আগত রোগীরা জানান।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ লুৎফুন্নাহার লাকী, ডাঃ সুরাইয়া ইয়াসমিন, ডাঃ ইয়াসির আরাফাত, ডাঃ আকিব হাসান, ডাঃ সোহাগ, ডাঃ লুৎফুন নেছা লতা, ডাঃ সঞ্চিতা সহ কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারীবৃন্দ।
বেলা ১১ টায় মানববন্ধনের বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে হাজির হন যশোরের সিভিল সার্জন ডাঃ বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস। এ সময় তিনি সকলকে শান্ত থাকার অনুরোধ করেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস প্রদান করলে মানববন্ধন ও কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হয়।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ লুৎফুন্নাহার লাকী জানান, সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাটি সত্যি দুঃখজনক। এ বিষয়টি হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন এবং কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মামলা করা হয়েছে।