বিদায় অনুষ্ঠানে শিক্ষকদের জামা-কাপড় কিনে না দেয়ায় শিক্ষার্থীকে মারপিট, ব্যবস্থার গ্রহণের আশ্বাস শিক্ষা কর্মকর্তার
আটঘরিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি: বিদায় অনুষ্ঠানে স্কুল শিক্ষকদের জামাকাপড় কিনে না দেয়া ও এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানের দিন স্কুলে না আসায় এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
পাবনার আটঘড়িয়া উপজেলার গোপালপুর চৌকিবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক এমন মারপিট করেছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও তার সহপাঠীদের। এমন ঘটনা পূর্বেও করেছেন বলে জানায় স্থানীয়রা। এ ঘটনায় বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিদ্যালয় মাঠে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
তাদের অভিযোগ, স্কুলের শিক্ষার্থীদের নতুন জামা কাপড় কিনে না দেয়া ও বিদায় অনুষ্ঠানে না আসায় এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধর করে রক্তাক্ত করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আখের উদ্দীন ও সহকারী শিক্ষক আমিরুল কায়সার।
মারধরের শিকার রক্তাক্ত শিক্ষার্থী মাহবুব হাসান রিয়াদ ও তার সহপাঠীরা জানায়, গত ৬ জানুয়ারি ২০২৪ সালের এসএসসি ব্যাচের বিদায় অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে ২৫ হাজার টাকা উত্তোলন করেন শিক্ষার্থীরা। তবে এ টাকার মধ্যে শিক্ষকদের নতুন জামাকাপড় ও দামি কলম কিনে দেয়ার আবদার করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আখের উদ্দীন ও সহকারী শিক্ষক আমিরুল কায়সার।
পরে নতুন জামা ও দামি কলম কিনে দিতে রাজী না হয়ে বিদায় অনুষ্ঠান করবে না বলে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ৮৫ জনের মধ্যে ৫০ জন সিদ্ধান্ত নেয়। পরে উত্তোলনের ২৫ হাজার টাকা সবাইকে ফেরত দেয়। তবে বাকি ২৫ জনকে নিয়ে এবং বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীদের থেকে ৩০-৫০ টাকা উত্তোলন করে মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিদায় অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এরপর বুধবার সকালে বিদায় অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত হওয়া শিক্ষার্থীরা এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র নিতে গেলে প্রবেশপত্র দিতে রাজি হয়নি প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক। উল্টো বিদ্যালয়টির এসএসসি ব্যাচের শিক্ষার্থী মাহবুব হাসান রিয়াদকে মারধর করেন প্রধান শিক্ষক আখের উদ্দীন ও সহকারী শিক্ষক আমিরুল কায়সার।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। গ্রামের ইমরান হোসেন, কামাল সরদার, আওয়াল হোসেন সেলিম হোসেন ও শাহীন রহমানসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই প্রধান শিক্ষক আখের উদ্দীন ও সহকারী শিক্ষক আমিরুল কায়সার নানা রকম অনিয়ম করে আসছেন। সব সময় ছাত্র-ছাত্রীদের গালিগালাজ করেন, মারধর করেন। এছাড়া গত এক বছর আগে বিদ্যালয়ের বই চুরি করে ধরা পড়েছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আখের উদ্দীন। নিজের আত্মীয়-স্বজনদের বিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্য করে চাকরি দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আখের উদ্দীন কথা বলতে পারেন না বলে সহকারী শিক্ষক আমিরুল কায়সারকে কথা বলতে বলেন।পরে সহকারী শিক্ষক বলেন, কোনো ছাত্রকে মারধর করা হয়নি। কোনো বকাবকিও করা হয়নি। ছাত্রছাত্রীরা মিথ্যা বানোয়াট তথ্য ছড়াচ্ছে। তাছাড়া যেসব ছাত্ররা অভিযোগ করেছেন তারা সকলেই বেয়াদব।
এসব বিষয়ে জানতে আটঘরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এস এম শাহজাহান আলী বলেন, কেউ যদি কোনো ছাত্রকে এমন মারধর করে থাকে এবং তা যদি সঠিক প্রমাণিত হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোনো রকমের ছাড় দেয়া হবে না।