রেশন কার্ড
১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হবার পর জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশের মানুষকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য রেশন কার্ড দিয়েছিল।প্রায় সকল মধ্যবিত্ত্ব,নিন্ম বিত্ত্ব,দরিদ্র সকল মানুষেরই রেশন কার্ড ছিলো।
পরিবারের প্রাপ্ত বয়স্ক সকলের নামে একটা করে কার্ড হতো, আর এতে পরিবার প্রতি নুন্যতম ৪/৫ টা কার্ড থাকতো।তাতে মাসের চাল,ডাল, তেল,লবন নিত্য প্রয়োজনীয় প্রায় সকল খাদ্যদ্রব্যই ন্যায্য মূল্যে দিতো,যা এখন টিসিবির ট্রাক সেল নামে পরিচিত।আরো একটা দোকান ছিলো,যার নাম ছিলো Cosco.এই দোকানের দ্রব্যগুলিও ছিলো ন্যায্য মূল্যর।
এসব রেশন আর কসকো দোকানের মাল মানুষকে বেঁচে থাকার মতো বড় রকমের একটা সুযোগ করে দিয়েছিলো।ভারতে রেশন কার্ড না থাকলে নাকি তার নাগরিকত্বও থাকেনা।সে দেশে একটা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য রেশন কার্ড অপরিহার্য।আর আমাদের দেশে এর কোন নামই নেওয়া যায় না।
আজকে জিনিষ পত্রের দাম এত পরিমান বেড়েছে যে মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষগুলিও ট্রাকের পিছনে লাইন দিয়ে ধাক্কা ধাক্কি করছে একবোতল তেল,ডাল,চিনির জন্য।অথচ এই একই মূল্যে প্রতি মহল্লায় ডিলারের মাধ্যমে রেশন কার্ড দিলে কি খুব বেশী ক্ষতি হয়ে যাবে?
হ্যা ক্ষতি হবে।ক্ষতি হবে অসাধু মুনাফা খোর ব্যবসায়ীদের।যারা সবকিছু গুদামজাত করে কৃত্তিম সংকট দেখিয়ে দাম বাঁড়িয়ে দেয় তাদের।ভারতে কোন কিছুর দাম বাড়ার খবর হবার সাথে সাথে আমাদের দেশের জিনিষের দাম ডবল হয়ে যায়,অথচ এই সব জিনিষগুলি তাদের আগেই কেনা ছিলো।
এতে তার আকাশ ছোঁয়া লাভ হয়ে গেলো একলাফ।যে দ্রব্যর দাম বাড়লো সেটা কিন্তু তখনও সে কিনে নাই।সেই চালানে মাল কিনে আনতে লাগবে আরো কমে দশ দিন।এই দশ দিনে তার যা করার তা সে করে ফেলে।
দেশের অধিকাংশ মানুষকে যদি সেনাবাহিনী,পুলিশের মতো রেশনিংয়ের আওতায় আনা যায় তাহলে এই সব মানুষগুলি অন্ততঃ খাদ্য নিরাপত্তাটা পেতো।অসাধু ব্যবসায়ীরা কারসাজি করার সুযোগ পেতোনা।বাজার দর স্হীতিশীল থাকতো।
সরকার রেশন দেওয়ার জন্য হলেও কৃষক থেকে অধীক পরিমানে ধান,চাল,ডাল কিনতো।এতে কৃষকও হতো লাভবান।তারাও খুশী মনে আরো বেশী ফসল ফলাতে পরিশ্রম করতো।আর এখন মধ্যসত্ব ভোগীরা মাঝখানদিয়ে লাভের অংশ খেয়ে ফেলে।কৃষক তার ফলানো ফসল রাস্তায়ও ফেলে দেয়।
মধ্যবিত্ত্ব আর নিন্ম শ্রেনীর মানুষকে খাদ্য নিরাপত্তা দেবার জন্য রেশন কার্ডের বিকল্প আর কিছু আছে বলে আমার মনে হয়না।আমাদের মাননীয় জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাতো বঙ্গবন্ধুরই কন্যা,তিনিতো জানেন জাতীর জনক অসাধু ব্যবসায়ীদের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে কি ভাবে দরিদ্র নিরীহ মানুষকে বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন।তাই,আপনিও একবার বিষয়টা ভেবে দেখুননা,আপনিতো বঙ্গকন্যা।
লেখক: মনিরুল হাসান পিন্টু