রাবি ছাত্রলীগের নতুন কমিটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন, ভাংচুর
রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছেন পদবঞ্চিত নেতারা। পদের দাবিতে ক্যাম্পাসের দলীয় টেন্টে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন ও পরে সদ্য সাধারণ সম্পাদকের কক্ষ ভাংচুর করেছেন তারা।
রবিবার (২২ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের দলীয় ট্রেন্টে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন।
পরে দলীয় ট্রেন্ট থেকে ক্যাম্পাসে শোডাউন বের করেন তারা। শোডাউন শেষে শনিবার (২১ অক্টোবর) রাতে ঘোষিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের হল মাদারবক্স হলে গিয়ে তার কক্ষে ভাঙচুর করেন। পরে পরিবহন মার্কেটে ছাত্রলীগের এক কর্মীকে দেখে মারধর করেন এবং তার মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে।
পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের দাবি, ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র না মেনে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি দিয়েছে। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রে বলা হয়েছে, বিবাহিত ও অছাত্ররা কমিটিতে আসতে পারবে না। কিন্তু যাদেরকে নিয়ে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে তারা দুজনেই বিতর্কিত। দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সঙ্গে সক্রিয় ছিলেন না সদ্য কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু। পড়াশোনা শেষ করে সেলুনের ব্যবসাসহ বিভিন্ন ব্যবসা এবং নারী কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত ছিল বাবু। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ড্রপআউট হয়েছেন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব। তার বিবাহিত ছবিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরপাক খাচ্ছে। এসব বিতর্কিত নিয়ে কমিটি ঘোষণা করায় আমরা অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলাম।
এ ব্যাপারে পদবঞ্চিত শাখা ছাত্রলীগ নেতা কাজী আমিনুল হক লিংকন বলেন, একজন নিষ্ক্রিয় কর্মীকে সভাপতি পদে বসানো হয়েছে, ক্যাম্পাস রাজনীতিতে যার কোনো ভূমিকা নেই। এ ছাড়া উচ্চ মাধ্যমিক পাস একজনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। সে অনার্স প্রথম বর্ষেই বিভাগ থেকে ড্রোপ আউট এবং বিবাহিত। এমনকি মাদকসহ বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত।
সদ্যঘোষিত কমিটির সহ-সভাপতি শাহিনুল ইসলাম সরকার ডন বলেন, বর্তমান কমিটি সম্পূর্ণ বিতর্কিত। অছাত্র, ইন্টার পাস ও বিতর্কিতদের নিয়ে এই কমিটি গঠিত হয়েছে। সভাপতি বাবু ছয় মাস আগে রাজনীতিতে এসেছে, নেতা হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক গালিব বিবাহিত, ইন্টারপাস ও বিতর্কিত। রাজাকারের নাতিও এই কমিটিতে আছে। আমরা এই কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ওরা আসতে পারবে না।
এমন কাউকে শাখা ছাত্রলীগের কমিটিতে আমরা দেখতে চাই না। এ ছাড়া বিতর্কিত এ কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অবাঞ্ছিত ঘোষণার পাশাপাশি কমিটি বাতিল এবং যোগ্যদের হাতে নেতৃত্ব প্রদানের দাবি জানান ছাত্রলীগের একাংশ।
আন্দোলনে উপস্থিত ছিলেন নবগঠিত কমিটির সহ সভাপতি শাহিনুর সরকার ডন, তৌহিদ দুর্জয় এবং পদবঞ্চিত সাকিবুল হাসান বাকী, অনিক মাহমুদ বনি ও শামীম হোসেনসহ প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী।
উল্লেখ্য, গতকাল রাতে ৩৯ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটিতে মোস্তাফিজুর রহমান বাবুকে সভাপতি ও আসাদুল্লা-হিল-গালিবকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।