সাংবাদিককে বিয়ে করায় উদ্যোক্তার চাকরি খেলেন চেয়ারম্যান, কাল শুনানি

মিজানুর রহমান নয়ন, কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি: সাংবাদিককে বিয়ে করার অভিযোগে কুমারখালীর চরসাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক নারীকে চাকুরিচ্যুত করার ঘটনায় শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। আগামীকাল সোমবার সকাল ১০ টায় ইউএনওর কার্যালয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এরআগে গত ১৯ জানুয়ারি দুপুরে ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী। গত ২০ জানুয়ারি " সাংবাদিককে বিয়ে, উদ্যোক্তার চাকুরি খেলেন চেয়ারম্যান " শিরোনামে দৈনিক সমকালে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল।
লিখিত অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, চরসাদিপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের মীম খাতুন (২৩) ২০২২ সালের ১৩ ফেব্রুআরি তারিখ থেকে পাঁচ বছরের জন্য চরসাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের নারী উদ্যোক্তা হিসেবে চেয়ারম্যান মেছের আলী খাঁ'র সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। এরপর থেকে সেখানে তিনি কর্মরত। কুষ্টিয়া থেকে প্রকাশিক আজকের আলো পত্রিকার কুমারখালী প্রতিনিধি মিজানুর রহমানের সঙ্গে গত ১৬ই ডিসেম্বর তাঁর বিয়ে হয়। গত ২৯ ডিসরম্বর তাঁর বিয়ের খবর চেয়ারম্যান জানতে পেরে চলতি বছরের এক জানুয়ারি মীমকে মৌখিকভাবে চাকরিচ্যুত করে পরিষদ থেকে বের করে দেন। আরো জানা যায়, মীম তাঁর চাকুরি ফিরে পেতে একাধিকবার চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করেছেন। তবুও চেয়ারম্যান তাকে পরিষদে ঢুকতে দেননি।
মীম খাতুন বলেন, চেয়ারম্যানের সাথে তার পাঁচ বছরের লিখিত চুক্তি রয়েছে। হঠাৎ সাংবাদিক মিজানকে বিয়ের খবর শুনে ১ জানুয়ারি থেকে চেয়ারম্যান সাহেব কোনো নোটিশ ছাড়ায় তাকে চাকুরিচ্যুত করেন। আইন অমান্য করে ও ক্ষমতার অপব্যবহার তাকে চাকুরিচ্যুত করায় ইউএনও স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন তিনি। শুনানির দিন ধার্য হয়েছে। সুষ্ঠ বিচারের দাবি জানান তিনি।
মীমের স্বামী সাংবাদিক মিজানুর রহমান বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরেই মূলত চেয়ারম্যান তাঁর স্ত্রীকে পরিষদে রাখতে চাচ্ছেন না চেয়ারম্যান। সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে চেয়ারম্যানের উপযুক্ত শাস্তি প্রত্যাশা করেছেন তিনি।
রোববার দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে দেখা হয় চরসাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মেছের আলী খাঁ'র সাথে। জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার যা কিছু বলার, তা তিনি শুনানিতে বলবেন। এখন অন্য কাউকে আর কিছু বলতে চাননা বলো সটকে পড়েন তিনি।
ইউএনও বিতান কুমার মন্ডল বলেন, পরিষদের কোনো উদ্যোক্তাকে বাদ দিতে হলে প্রশাসনকে জানিয়ে প্রথমে শোকজ নোটিশ করতে হয়। চেয়ারম্যান ইচ্ছে করলেই এভাবে কাউকে বাদ দিতে পারেন না। আগামীকাল (সোমবার) সকালে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। অভিযোগের সত্যতা পেলে যথাযত কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হবে বলে জানান তিনি।