‘নিউ ইয়র্কের ভোটার’ সাদিক, মনোনয়ন বাতিল চেয়ে আপিল
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর মনোনয়নপত্র বাতিল চেয়ে আপিল হয়েছে। আপিল করেছেন ওই আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাহিদ ফারুক শামীম। সাদিকের বিরুদ্ধে দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিযোগ আনা হয়েছে।
সাদিক সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) কার্যালয়ে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমের পক্ষে তাঁর মনোনয়নপত্রের সমর্থনকারী কেবিএস আহমেদ এ আবেদন করেন।
আপিলে সাদিক আব্দুল্লাহকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের ভোটার হিসেবে উল্লেখ করে সেখানকার ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া তথ্যও যুক্ত করা হয়েছে। আপিলটি করা হয় গতকাল বুধবার। আপিলে বলা হয়েছে, সাদিক নিউ ইয়র্ক সিটির নাগরিক।
সেখানকার ভোটার তালিকায় তাঁর নাম সেরনিয়াবাত এস আব্দুল্লাহ উল্লেখ রয়েছে। ভোটার সিরিয়াল, ভিএসএন ৪১০৯০৪০০৭। সাদিকের স্ত্রী লিপি আব্দুল্লাহও একই সিটির ভোটার। তাঁর ভোটার সিরিয়াল, ভিএসএন ৪১০৯১৪০৮৮।
এছাড়াও সাদিক আব্দুল্লাহ সিটি নিবাচনে যে সম্পদ বিবরণী দিয়েছিলেন, তা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নিবাচনের হলফনামায় এড়িয়ে গেছেন। এমনকি তাঁর স্ত্রীর নামে আয়কর রিটার্ন হলফনামায় দেননি। স্ত্রীর নামে থাকে নিউ ইয়র্কের বাড়ির তথ্যও গোপন করা হয়েছে বলে আপিলে উল্লেখ আছে।
আরও পড়ুন: স্ত্রী-কন্যাকে দান করেছেন, সম্পদ কমেছে অর্থমন্ত্রীর
আইনজীবী কেবিএস আহমেদ মুঠোফোনে বলেন, বরিশাল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাদিক আব্দুল্লাহ তাঁর হলফনামায় অসত্য তথ্য দিয়েছেন। এমন অভিযোগ রিটানিং কর্মকর্তার কাছে দাখিল করেছিলাম।
তবুও তাঁর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটানিং কর্মকর্তা।মনোনয়নপত্র গ্রহণের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছে। হলফনামায় অসত্য তথ্য দেওয়ায় এ আপিল করা হয়। কেবিএস আহমেদ আরো বলেন, ‘রিটার্নিং কর্মকর্তা সাদিক আব্দুল্লাহর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন। আমরা বিষয়টি তখন নজরে এনেছিলাম।
সেখানে বিষয়টি তিনি (রিটার্নিং কর্মকর্তা) আমলে নেননি। এজন্য ইসিতে আপিল করেছি। আশা করি, নির্বাচন কমিশন আপিল শুনানি করে, সঠিক রায় দেবেন। আগামী ১০-১৫ ডিসেম্বর আপিল নিষ্পত্তি করবে নির্বাচন কমিশন।’
উল্লেখ্য, বরিশালে সিটি নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যে বিভাজন দেখা দিয়েছিল, তা চূড়ান্ত রূপ নিয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। জাতীয় নির্বাচনে বরিশাল-৫ আসনের দলীয় মনোনয়ন চেয়েও পাননি মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বিদায়ী মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ। মনোনয়ন পান বর্তমান সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।
গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়ন চেয়ে পাননি সাদিক আবদুল্লাহ। তাঁর চাচা আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত মনোনয়ন পেয়ে মেয়র নিবাচিত হয়েছেন।
এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দলীয় মনোনয়ন থেকেও বাদ পড়েন সাদিক আব্দুল্লাহ। দলীয় মনোনয়ন পান জাহিদ ফারুক শামীম। এই আসনে মনোনয়ন বৈধতা পায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহিদ ফারুক শামীম, স্বতন্ত্র প্রাথী সালাহউদ্দিন রিপনসহ আট প্রার্থীর।
ইতিমধ্যে দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকায় বরিশাল-৪ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী দলের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহম্মেদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। গত সোমবার বিকেলে বরিশালের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।