ছাত্রীদেরকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক ও দপ্তরি কারাগারে

ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার ভাড়াসিমলা ইউনিয়নের স্বরাব্দীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুর রহমান ও দপ্তরী সাইফুল্লাহকে আটক করেছে পুলিশ।
অভিভাবক ও গ্রামবাসির অবরোধের মুখে রোববার (২৭ নভেম্বর) বিকেল তিনটার দিকে তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে আটক করা হয়।
আটক হওয়া প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম (৪৫) সরাফদিপুর গ্রামের মৃত ইসরাইল সরদারের ছেলে এবং তার সহযোগী দপ্তরি কাম নৈশপ্রহরী সাইফুল ইসলাম মারকা গ্রামের জহুর আলী গাজীর ছেলে।
এ ঘটনায় যৌন নিপীড়নের শিকার ওই স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর পিতা বাদী হয়ে প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম এবং দপ্তরি সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে রোববার থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেছেন।
স্কুলের সভাপতি নাজমুল হাসান, সহসভাপতি আবু তৈয়ব মহাসিন, শিক্ষার্থীর মা জুলিয়া পারভীন, পিতা মনিরুল ইসলামসহ একাধিক ব্যক্তি সাংবাদিকদের জানান, কালিগঞ্জ উপজেলার বহুল আলোচিত প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম ওই স্কুলে যোগদানের পর হতে তার সহযোগী দপ্তরি সাইফুল ইসলামের সহযোগিতায় দীর্ঘদিন ধরে স্কুলের বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি করে আসছিল। তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে দপ্তরি সাইফুল ইসলাম প্রাইভেট পড়ানোর কথা বলে বিদ্যালয়ের গোপনকক্ষে যৌন নিপীড়ন চালালে ওই শিক্ষার্থী বিষয়টি তার বাবা-মাকে জানায়। শিক্ষার্থীর বাবা-মা বিষয়টি নিয়ে ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলামকে জানান।
ঘটনা নিয়ে রোববার দুপুর ১২টার দিকে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভা চলাকালে প্রধান শিক্ষক তার সহযোগী দপ্তরি সাইফুল ইসলামকে জরিমানা করে রেহাই দেওয়ার কথা বললে অভিভাবকরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। ওই সময় উত্তেজিত অভিভাবক এবং এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষক এবং দপ্তরিকে স্কুলে অবরুদ্ধ করে রেখে থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে থানা থেকে উপরিদর্শক মোরশেদসহ পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং তাদেরকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।
এ ব্যাপারে থানার উপপরিদর্শক মোর্শেদ সাংবাদিকদের বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে দুজনকে গ্রেপ্তার করে আনা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে এর আগেও বিভিন্ন স্কুলে দায়িত্ব পালনের সময় ছাত্রীদের ওপর যৌন নিপীড়ন চালানোর অভিযোগ রয়েছে। যে কারণে তাকে একাধিকবার সাময়িক বরখাস্তসহ বিভাগীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন স্কুলে বদলি করা হয়।