নরমাল ডেলিভারির জন্য যেসব আমল করবেন
প্রত্যেক গর্ভবতী নারীরই প্রত্যাশা থাকে যে তার ডেলিভারি নরমাল হোক। এই অবস্থায় বিশেষভাবে যে কাজটি করতে হবে সেটি হলো দোয়া কবুলের সময়গুলোতে আল্লাহ তাআলার কাছে সহজ ডেলিভারির জন্য দোয়া করা। অবশ্য যেকোনো সময় আল্লাহ তাআলা দোয়া কবুল করেন। তবুও হাদিসে কিছু বিশেষ সময়ের কথা উল্লেখ রয়েছে, যখন দোয়া করলে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
যেমন, শেষ রাতের দোয়া, সেজদার সময় দোয়া, আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়, ফরজ নামাজের পর, জুমার দিন আসর নামাজের পর, বৃষ্টির সময়, ইফতারের সময়, শবে কদরের রাতে এবং হজের মৌসুমে দোয়া করলে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। (দ্রষ্টব্য- মুসলিম: ৭৫৮, ৪৮২, ১৪০৭; তিরমিজি: ২১২, ৩৪৯৮; বুখারি: ৬৪০০; সুনানে আবু দাউদ: ১৩৭২; সহিহুল জামি: ৩০৭৮; মুসনাদে আবি ইয়ালা: ২০৯০)
সুতরাং দোয়া কবুলের এই সময়গুলোতে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে। তাছাড়া ডেলিভারির সময় যত ঘনিয়ে আসবে তত বেশি দরুদ, ইস্তেগফার ও দোয়া ইউনুস পড়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন আলেমরা। সেইসঙ্গে দান-সদকা করার কথাও বলেন। এতে করে আল্লাহ তাআলা বান্দার যেকোনো মসিবত, দুশ্চিন্তা ও দুঃখ-কষ্ট লাঘব করে দেন এবং কঠিন পরিস্থিতিতে উত্তরণের পথ দেখিয়ে দেন। (দেখুন- তিরমিজি: ২/৭২; মাজমাউজ জাওয়ায়েদ: ১০/২৪৮; মুস্তাদরাকে হাকেম: ৭৬৭৭; সুরা আম্বিয়া: ৮৮)
এছাড়াও পবিত্র কোরআনের সুরা রাদের ৮নং আয়াত, সুরা ফাতির ১১ নং আয়াত, সুরা নাহাল ৮৭নং আয়াত এবং সুরা যিলযাল পড়ে গর্ভবতী মহিলাকে ফুঁ দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন অনেক আলেম। শায়খ ইবনু উসাইমিন (রহ) বলেন, ‘গর্ভবতীর সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে কষ্টের সময় উল্লেখিত আয়াতগুলো পড়ার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা অনেককে উপকার দান করেছেন।
সুতরাং একজন মহিলা আয়াতগুলো পড়ে সন্তান প্রসবকারীর উপর ফুঁ দেবে অথবা যে কোনো লোক তা পাঠ করে পানিতে ফুঁ দেবে। তারপর সেই পানি গর্ভবতীকে পান করাবে এবং তা দিয়ে তার পেট মালিশ করবে।’ এই ধরণের আমলে শরিয়তের কোনো বাধা নেই।
এছাড়াও কোনো কোনো আলেম বলে থাকেন, আল্লাহ তাআলার গুণবাচক নাম (اَلْمُبْدِئُ) ‘আল-মুবদিয়ু’ (অর্থ: প্রথমবার সৃষ্টিকারী) জিকিরের মাধ্যমে গর্ভের সন্তানের হেফাজত এবং সহজে-নিরাপদে সন্তান প্রসব হয়। সুতরাং এই আমলটিও করতে পারেন।
তবে নরমাল ডেলিভারির সুনির্দিষ্ট কোনো দোয়া কোরআন-হাদিসে নেই। গর্ভকালীন সময় ও সন্তান প্রসব মূলত সবর করার বিষয় এবং এতে অনেক সওয়াব ও পুরস্কার রয়েছে। এই সময়ে কারো মৃত্যু হলে নবীজির ঘোষণা অনুযায়ী আল্লাহ তাআলা তাকে শহিদের মর্যাদা দান করবেন। আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক গর্ভবতী নারীকে সব ধরনের জটিলতা থেকে নিরাপদ রাখুন। গর্ভকালীন সময়ের কষ্ট সহজ করে দিন। আমিন।