স্টাফ রিপোর্টার, কুমিল্লা: কুমিল্লায় নাহিদা আক্তার (১৯) নামের এক প্রসূতির সিজারের সময় ভুল চিকিৎসা করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে কুমিল্লার আলিফ হসপিটাল নামের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় চারদিনের মাথায় দ্বিতীয়বারের মতো অপারেশন করা হয়েছে ওই প্রসূতিকে। চারদিনের মাথায় দুইবার অপারেশন হওয়ায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আছেন ওই প্রসূতি নারী।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে দ্বিতীয় বারের মতো অপারেশন করা হয় ওই প্রসূতি নারীর। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) রাতে সিজারের অপারেশন করা হয় নাহিদার।
ঘটনাটি কুমিল্লা নগরীর টমছমব্রিজের উত্তর পাশে লাকসাম রোডের আলিফ হসপিটাল নামক একটি হাসপাতালে ঘটেছে। ভুক্তভোগী নাহিদা জেলার লালমাই উপজেলার কেশনপাড় এলাকার ফাহিম হোসেনের স্ত্রী।
রোববার রাতে নাহিদার স্বজনরা বলেন, গত বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) প্রসব বেদনা ওঠে নাহিদার। এসময় পূর্ব পরিচিত মনোরঞ্জন নামের ওই হাসপাতালের এক ওয়ার্ডবয়ের পরামর্শে নাহিদাকে আলিফ হসপিটালে ভর্তি করা হয়। ওইদিন রাতে সিজারের মাধ্যমে ফুটফুটে একটি শিশুর জন্ম দেন নাহিদা। সিজারের অপারেশন করান ওই হাসপাতালের সার্জন ডা. গাজী সালাউদ্দিন।
সিজারের পর সেলাই করে নাহিদাকে বেডে স্থানান্তর করা হয়। অপারেশনের পর থেকেই নাহিদার প্রস্রাব এবং পায়খানা বন্ধ হয়ে যায়। ধীরে ধীরে পেট ফুলে যায় নাহিদার। রোববার সকাল পর্যন্ত তার প্রস্রাব-পায়খান না হওয়াই এবং পেট ফুলে যাওয়া নিয়ে চিকিৎসকের সাথে কথা বলেন নাহিদার স্বজনরা। এসময় চিকিৎসক টমছমব্রিজ ল্যাব এইডে একটি আল্ট্রাস্নোগ্রাফি করার পরামর্শ দেন। পরে নাহিদাকে আল্ট্রাস্নোগ্রাফি করে পেটের ভেতর কিছু রয়ে গেছে বলে জানান ল্যাব এইডের চিকিৎসক। দ্রুত তার অপারেশনের পরামর্শ দেন। পরে রাত ৯টার দিকে অপারেশন করা হয় নাহিদার। তবে দ্বিতীয় অপারেশনে শুধু পেটে রক্তজমাট বাঁধা ছিল বলে নাহিদার এ পরিস্থিতি হয়েছে বলে জানানো হয় স্বজনদের।
ঘটনার বিষয়ে সিজার করা ডা. গাজী সালাউদ্দিনকে ফোন করা হলে তিনি আরেকটি অপারেশনে ব্যস্ত আছেন বলে সংযোগ কেটে দেন।
আলিফ হাসপাতালের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন সুজন বলেন, রোগীকে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক সিজার করেছে। পেটে পানি এবং রক্ত থাকায় আবার অপারেশন করতে হয়েছে। তবে রোগী এখন সুস্থ হওয়ার দিকে।
কুমিল্লার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ নাজমুল আলম বলেন, এ বিষয়টি এখনই জানলাম। খোঁজ নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাসপাতালটির অনুমোদন রয়েছে। রোগীর স্বজনরা লিখিত অভিযোগ করলে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবে।