জসিম সিদ্দিকী, কক্সবাজার: কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হাসপাতালের চিকিৎসক ও ওয়ার্ডকর্মীদের ওপর হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে । এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চিকিৎসকদের কর্মবিরতি পালনের ফলে বিপাকে পড়েছেন হাজারো রোগী।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত ১১ টার দিকে কক্সবাজার সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন হামলার শিকার হাসপাতালের চিকিৎসক ডা: সজীব কাজী।
এই ঘটনায় গ্রেফতারকৃতরা হলেন- কক্সবাজার পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের নতুন বাহারছড়া এলাকার মোহাম্মদ সেলিম রেজার ছেলে তাহসিন মোহাম্মদ রেজা (২৫), তামিম মোহাম্মদ রেজা (২২), কালুর দোকান এলাকার সাইফুল আজিমের ছেলে সাইদুল লতিফ সাকিব (২৪) ও টেকপাড়া এলাকার আবু বক্করের ছেলে সাইফ বিন সম্রাট (২৪)।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাকিল আহমেদ।
তিনি জানান, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসকের উপর হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। অজ্ঞাত ৩০/৪০ জনকে আসামী করে মামলাটি দায়ের করা হয় ।
এ ঘটনায় জড়িত থাকায় চারজনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি দুজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পরবর্তীতে তাদেরও আদালতে সোপর্দ করা হতে পারে।
এর আগে গেল বুধবার রাতে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হাসপাতালের চিকিৎসক ও ওয়ার্ডকর্মীদের ওপর হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় বন্ধ রয়েছে চিকিৎসা সেবা। হামলার জের ধরে কর্মবিরতি পালন করছেন চিকিৎসকরা। তবে সীমিত আকারে চালু রয়েছে হাসপাতালের জরুরী সেবা। এতে বিপাকে পড়েছে রোগীরা।
বুধবারের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, একজন রোগী মৃত্যুর পর স্বজনরা সিসিইউতে প্রবেশ করে প্রথমে চিকিৎসকের কক্ষ ভাঙচুর করে। পরে চিকিৎসক সজীবকে মারধর করে টেনে-হিঁচড়ে চারতলা থেকে নিচে নামিয়ে আনেন। পরে অন্য চিকিৎসকরা এসে তাকে উদ্ধার করে। এ সময় হাসপাতালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এই ঘটনার পর অভিযুক্তদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবিতে কমপ্লিট শাটডাউনের ঘোষণা দেন হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকরা। তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে কর্মবিরতি পালন করছেন হাসপাতালের নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, আমাদের জন্যে হাসপাতালে কোন ধরনের নিরাপত্তা নেই। চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে আমরা কর্মবিরতি চালিয়ে যাবো।
এই বিষয়ে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মং টিং ঞো বলেন, যে রোগী মারা গেছেন তার অবস্থা ক্রিটিকাল ছিলো। রোগীর এমন পরিস্থিতিতে তাকে কার্যকর সেবা দেয়ার জন্য স্বজনদের দরকার ছিল। কিন্তু ওই সময় স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন না। চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছেন। তবুও কর্তব্যরত চিকিৎসকের উপর হামলা করা হয়েছে। হাসপাতালে চলমান পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা জনিত কারণে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।