মোঃ ইব্রাহীম মিঞা, বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার ছোট যমুনা নদীর পাড়ে ৩ মাস ১ হাজার হাঁস পালন করে এখন নিজ খামারে সেই হাঁসের ডিম বিক্রয় করে মাসে প্রায় লক্ষ টাকা আয় করছেন জহুরুল ইসলাম ফারুক।
স্ত্রী জেবা বেগমের অক্লান্ত পরিশ্রম ও চেষ্টায় একটি হাঁসের খামার জীবনের বাঁক বদলে দেয় জহুরুল ইসলাম ফারুকের। জহুরুল ইসলাম ফারুক দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার পার্শ্ববর্তী ফুলবাড়ী উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের জানিপুর গ্রামের মোঃ জাফর আলী ও জরিনা দম্পতির ছেলে।
তিন মাস আগে বিরামপুর উপজেলার পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়নের জোতযয়রামপুর ছোট যমুনা নদীর পাড়ে ৩০ হাজার টাকায় ১ হাজার 'ক্যাম্বেল' জাতের হাঁসের বাচ্চার সেড করেন। এ জাতের হাঁসগুলো একটানা ১৮-২৪ মাস পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে। পরবর্তীতে হাঁসগুলো ডিম দেওয়ার উপযুক্ত হলে ফুলবাড়ি উপজেলার জানিপুর গ্রামের ধানের জমির মাঝে নিজের ফাঁকা ৮ শতক জমিতে তৈরিকৃত 'বাঁধন বিভা হাঁস' খামারে হাঁসগুলো স্থানান্তর করেন। তিনি জানান, ১ হাজার হাঁসের মধ্যে ৬শত ২০টি হাঁসা হাঁস প্রতিটি হাঁসের ওজন প্রায় ১ কেজি ৫০০ গ্রাম ৪শত টাকা হতে ৫শত টাকায় বিক্রয় করেছেন। বর্তমানে তার খামারে ৩ শত ৮০টি হাঁস রয়েছে। সে জানায় প্রতিদিন খামার থেকে এখন ২৫০-২৭০ টি ডিম পাচ্ছেন, এর পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। তিনি আশা রাখেন শীত মৌসুমে খামার থেকে আশানুরূপ ডিম সে পাবে।
হাঁসের খামার হতে সংগৃহীত ডিমগুলো ফুলবাড়ি পৌরশহরের ভোলা মিয়া নামের এক ব্যবসায়ীর নিকট বিক্রয় করেন। ঐ ব্যাবসায়ী ১ দিন পর পর খামারে এসে প্রতিটি হাঁসের ডিম ১৫-১৭ টাকা দরে ক্রয় করেন। জহুরুল ইসলাম ফারুক বলেন, খামারে উৎপাদিত হাঁসের ডিম হতে প্রতি মাসে ১ লক্ষ ২০ হাজার হতে ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার ডিম বিক্রয় করে থাকেন। হাঁসের খামারটির পরিচর্যার জন্য তার ভাগ্না সরোয়ার হোসেন সবসময় খামারে হাঁসগুলোর দেখাশোনা করেন। হাঁসের খাবার দেওয়া থেকে শুরু করে সকালে ডিম উত্তোলন, পরিষ্কার করা, ঔষধ খাওয়ানোসহ সঠিক সময়ে হাঁসগুলোকে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে খাদ্য দেওয়া ও সময়মতো খামারে ঢুকানো। জহুরুল ইসলাম ফারুক বলেন, হাঁসের খাবার, ঔষধ ও কর্মচারীদের বেতন দিয়ে প্রতিমাসে ৫০-৭০ হাজার টাকা খরচ হয়ে থাকে এ সমস্ত খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মাসে ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা আয় হচ্ছে।
বিরামপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. বিপুল কুমার চক্রবর্তী বলেন, নদী, খাল-বিলে ভরা এ উপজেলায় হাঁস পালন ব্যাপক সম্ভাবনাময়। উপযোগী পরিবেশের কারণে অনেকেই নিজ উদ্যোগে খামার গড়ে যেমন স্বাবলম্বী হচ্ছেন তেমনি ডিম ও মাংসের চাহিদা মেটাচ্ছেন।আমরা প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে হাঁস পালনকারীদের পরামর্শ ও সহায়তা দিচ্ছি। হাঁস ও ডিমের ব্যাপক চাহিদা থাকায় এবং বিপণন ব্যবস্থা ভালো থাকায় উপজেলায় দিন দিন খামারির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এ পর্যন্ত উপজেলায় প্রায় ৩৪ টি খামার রয়েছে।