মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: মিরসরাইয়ে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় পানিবন্দী হয়ে আছেন প্রায় দুই লাখ মানুষ। অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করেছেন। আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করা তিন হাজার মানুষ এস রহমান ট্রাস্টের উদ্যোগে প্রতিদিন পাচ্ছেন রান্না করা খাবার। পাশাপাশি গবাদিপশুর খাদ্যের ব্যবস্থাও করেছেন তারা।
জানা গেছে, মিরসরাইয়ের এস রহমান ট্রাস্টের উদ্যোগে মহাজনহাট কলেজ, শান্তিরহাট মাদরাসা, জামালপুর মাদরাসার আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান ও উপজেলার ধুম ইউনিয়ের কিছু গ্রামে বহুতল বাড়িতে আশ্রয় নেওয়া প্রায় তিন হাজার মানুষকে প্রতিদিন খাবার দিচ্ছে এই ট্রাস্ট। শিশুদের মাঝে দেওয়া হচ্ছে বিস্কুট। পাশাপাশি যাবতীয় ওষুধ।
আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করা শিরিনা আক্তার বলেন, বন্যার পানিতে আমাদের বাড়িঘর সব ডুবে গেছে। ছেলে-মেয়েদের নিয়ে এখানে আশ্রয় নিয়েছি। শুরু থেকে প্রতিদিন আমাদের তিনবেলা রান্না করা খাবার দিয়ে যাচ্ছে এস রহমান ট্রাস্ট।
কুলছুমা আক্তার বলেন, ছোট ছোট ছেলেমেয়ে নিয়ে প্রথমদিন থেকে এই আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছি। আমার ছেলে-মেয়েদের জন্য শুকনো খাবার ও প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র দিচ্ছে এখান থেকে।
এস রহমান ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক ও মহাজনহাট ফজলুর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আজমল হোসেন বলেন, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে উপজেলার ধুম ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। মহাজনহাট কলেজসহ আরও বাকি তিনটি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করা সাধারণ মানুষদের মাঝে প্রথমদিন থেকে এস রহমান ট্রাস্টের উদ্যোগে দৈনিক তিন হাজার মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। খাবারের পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানি ও মহিলাদের যাবতীয় জিনিসপত্র ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রে বিদ্যুৎ না থাকায় জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়াও সাধারণ মানুষদের পাশপাশি মহাজনহাট কলেজে প্রায় ১০০টি গরু-ছাগলের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মহাজনহাট কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক নোমান মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, এস রহমান ট্রাস্টের উদ্যোগে মহাজনহাট কলেজ, শান্তিরহাট মাদরাসা, জামালপুর মাদরাসার আশ্রয়কেন্দ্র ও উপজেলার ধুম ইউনিয়ের কিছু গ্রামে বহুতল বাড়িতে আশ্রয় নেওয়া প্রায় তিন হাজার মানুষকে প্রতিদিন তিন বেলা রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি শুকনো খাবার বিশেষ করে বাচ্চাদের বিভিন্ন খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া এখানে এক সপ্তাহ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের শিশু রয়েছে। তাদের জন্য চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছেন মহাজনহাট কলেজের জীব বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ফেরদৌস হোসাইন, পর্দাথ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ফয়সাল, কলেজের ট্রান্সপোর্ট বিভাগের আসিফ, শিমুল, রাজিব, শাহিন, লিটন, মাহফুজ এবং এলাকার স্থানীয় তরুণরা কাজ করে যাচ্ছেন।