শিব্বির আহমদ রানা, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতিনিয়ত নিধন করা হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য উপকারী বিপন্ন প্রজাতির কুচিয়া। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ফসলী জমি ও জলাশয়ের পাশে মাটির গর্তে বসবাস করে প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য উপকারী এ কুচিয়া। বিভিন্ন স্থান থেকে চাঁই দিয়ে ধরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হচ্ছে। এসব কুচিয়া আকার ওজন অনুযায়ী ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করেন তারা। পরে তা ঢাকা হয়ে বিভিন্ন দেশে বেশি দামে রপ্তানি করা হয়। জানা যায়, কুচিয়া অতি সুস্বাদু, স্বাস্থ্যকর ও ঔষধি গুণসম্পন্ন এক প্রকার মাছ।
বাঁশখালীর বিভিন্ন এলাকায় প্রতিনিয়ত রাতেই ফসলী জমির আইলে ও জলাশয়ের পাশে বাঁশের কাঠি দিয়ে তৈরি করা চাঁই বসিয়ে বিশেষভাবে ফাঁদ পেতে ব্যাপক হারে নিধন করা হচ্ছে কুচিয়া। কুচিয়া নিধন করার পর কুচিয়া শিকারীরা বস্তা ও বড় বড় ড্রামভর্তি করে পার্বত্য জেলার বিভিন্ন এলাকায় ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে বিক্রয় করছে। পার্বত্য জেলার বিভিন্ন এলাকায় বসবাসকারী উপজাতীয় সম্প্রদায়ের লোকজন কুচিয়া রান্না করে মজাদার খাবার হিসাবে খেয়ে থাকে। দেশের বাইরে অধ্যুষিত দেশের মধ্যে দেশ থেকে শিকার করা কুচিয়া বিক্রয় করে কয়েকটি সিন্ডিকেটের সদস্যরা বিপুল পরিমান টাকা আয় করছে বলে একাধিক সুত্র জানায়।
গত মঙ্গলবার সকালে উপজেলার শীলকূপ ইউনিয়নের পশ্চিম মনকিচর, জালিখালী বাজারের পাশে বিভিন্ন জলাশয়ে ফসলী জমিতে বাঁশের তৈরি চাঁই বসিয়ে নিধন করা কুচিয়া ড্রামভর্তি করে ট্রাকে করে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
কৃষিবিদদের সাথে কথা বললে তারা জানান, 'অনেক জায়গায় মাছ হিসেবে এটি প্রসিদ্ধ। কুচিয়া ফসলী জমির মাটির নিচে বসবাস করে। ফসলী জমিতে কুচিয়া বসবাস করার কারনে ফসল উৎপাদন হয় বেশী। গ্রামের ফসলী জমি ও জলাশায়ের পশে মাটির গর্তে বসবাস করা কুচিয়া ব্যাপক হারে নিধন করা হলে প্রাকৃতিক পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হবে।'
বাঁশখালী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, 'কোনো কোনো জায়গায় কুচিয়া মাছ হিসেবে প্রসিদ্ধ। কুচিয়া ধরা নিষেধ এমন কোনো বাধা বা আইন নেই। কুচিয়া খাওয়ার জন্য ধরা যাবে। তবে কারেন্ট জাল বা অবৈধ কোন জাল বা ফাঁদ দিয়ে ধরা যাবে না। কিন্তু অবাধে কুচিয়া ধরে বিভিন্ন দেশে পাচার করলে অবশ্যই এটা অপরাধ। এ বিষয়টি আমরা নজরে রাখব।