শাহাজাদা এমরান, কুমিল্লা: শিক্ষাভবনে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তাৎক্ষণিক আন্দোলন কর্মসূচি চলাকালীন সময়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে কুমিল্লায় কর্মরত সরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২ টায় কুমিল্লা জিলা স্কুলের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
এসময় মানবন্ধনে কুমিল্লা জিলা স্কুল, কুমিল্লা ফয়জুন্নেছা স্কুল ও বৈষম্যবিরোধী সরকারী মাধ্যমিক শিক্ষক পরিষদের ব্যানারে সারাদেশের ন্যায় কুমিল্লায়ও কালো ব্যাজ ধারণ, মানববন্ধন এবং কর্মবিরতি পালন করছে কুমিল্লার বিভিন্ন সরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। পরে, শিক্ষকদের উপর হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জোর দাবি জানিয়ে মানবন্ধনে বক্তব্য রাখেন উপস্থিত শিক্ষকরা।
বক্তারা বলেন, শিক্ষক লাঞ্ছিতের সাথে জড়িত শিক্ষা কর্মকর্তা ও সেসিপ প্রকল্পের কর্মচারীদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। নিয়োগ বিধি অনুযায়ী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের মোট পদের ৫০ ভাগ সিনিয়র শিক্ষকদের পদায়নের চলমান কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। সহকারী শিক্ষক হতে সহকারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের শূণ্যপদে পদায়ন করতে হবে। দীর্ঘদিনের বৈষম্য নিরসনে এন্ট্রিপদ (সহকারী শিক্ষক) ৯ম গ্রেডে উন্নীতকরণসহ ৪ স্তরীয় (সরকারি কলেজের ন্যায়) পদসোপান বাস্তবায়ন করতে হবে। বকেয়া টাইম স্কেল, সিলেকশন গ্রেড ও অগ্রিম বর্ধিত বেতন সমস্যার সমাধান করে দ্রুত মঞ্জুরী আদেশ প্রদান করতে হবে। মাধ্যমিক শিক্ষায় চলমান বৈষম্য নিরসনে ২০১০ এর শিক্ষানীতির আলোকে মাধ্যমিকের জন্য "স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর" প্রতিষ্ঠা করতে হবে। প্রকল্প থেকে আর কোন জনবলকে রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত করা চলবে না। আমাদের দাবিগুলো মানতে হবে।
এসময় মানবন্ধনে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আবদুল হাফিজ, নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশেদা আক্তার, বাসমাশি কুমিল্লা অঞ্চল কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জিয়াউল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোপাল দত্ত চৌধুরী, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান, সাবেক প্রচার সম্পাদক ও বুড়িচং আনন্দ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক জাকির হোসেন প্রমুখ।
মানবন্ধন শেষে শিক্ষকরা একটি বিক্ষোভ মিছিল জিলা স্কুল প্রাঙ্গন থেকে শুরু করে জেলা শিক্ষা অফিসের সামনে অবস্থান নেয়। পরে সেখানে মানবন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, ঢাকায় নিজস্ব ব্যানারে অবস্থানকালে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মিছিলে সেসিপ প্রকল্প থেকে অবৈধভাবে রাজস্ব খাতে নিয়োগ পাওয়া নিয়োগবিধিহীন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও মাউশির কর্মচারি নেতৃবৃন্দ শিক্ষকদের মিছিলে বাঁধা ও শিক্ষকদের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে আহত করে। এরমধ্যে ঢাকা গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক হারুনুর রশিদ, মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক এ কে এম আজাদ, সহকারী শিক্ষক আল নাহিয়ান গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে।