মো: মোশাররফ হোসেন মনির, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: বাবা দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন এক বছর আগে। মাথার ওপরের সেই ‘ছাতা’ হারিয়ে কিশোর বয়সেই সংসারের হাল ধরেছিল সাব্বির। অটোরিকশা চালিয়ে রোজগারে চালাতেন সংসার ও পড়ালেখার খরচ। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শামিল হতে গিয়ে গুলিতে সাব্বিরের সবকিছু থেমে গেছে। কর্মচঞ্চল ছেলেটিকে হারিয়ে দিশেহারা মা রিনা আক্তার পড়েছিলেন অথৈ সাগরে। অবশেষে পরিবারটির মুখে হাসি ফোটালেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ। সাব্বিরের পরিবারকে নগদ আর্থিক সহায়তা এবং বসবাসের জন্য ঘর করে দিচ্ছেন তিনি।
নিহত কিশোর আমিরুল ইসলাম সাব্বির কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দারোরা ইউনয়নের কাজিয়াতল গ্রামের মৃত আলমগীর হোসেনের ছেলে। সে দেবিদ্বার উপজেলার মরিচাকান্দা জিয়া স্মৃতি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ত। দেবিদ্বার উপজেলার ভিংলাবাড়ী গ্রামে মামার বাড়িতে থাকত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শুরু থেকে অংশ নেয় সাব্বির। ৪ আগস্ট দেবিদ্বারে মিছিলে আন্দোলনকারীদের ওপর ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা ও পুলিশ গুলি চালায়। এতে গুলিবিদ্ধ হয় সাব্বির। তার মাথায় ও কানে গুলি লাগে। হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ৩৯ দিন পর মারা যায় সে।
সাব্বিরের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন মুরাদনগরের জননন্দিত বিএনপি নেতা কায়কোবাদ। অসহায়ত্বের গল্প শুনে তুরস্ক থেকে নেতাকর্মীদের মাধ্যমে পরিবারটিকে সহায়তা পাঠিয়েছেন তিনি। শুক্রবার বিকেলে উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা সাব্বিরের মায়ের হাতে তুলে দেন পঞ্চাশ হাজার টাকা। তা ছাড়া বসবাসের জন্য তৈরী করে দেওয়া হচ্ছে একটা ঘরও।
সাব্বিরের মা রিনা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমরা সরকারি কোনো সহায়তা পাইনি। কায়কোবাদ দাদা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। টাকা দিয়েছেন, সুন্দর একটা ঘর করে দিচ্ছেন। আল্লাহ আমাদের মাথার ওপর রহমত হিসেবে তাকে পাঠিয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, কায়কোবাদ দাদা শুধু আমার পরিবারকে না! তিনি আমার সাব্বিরের মতো আরো ৭টি পরিবারের পাশে দাড়িয়েছেন। তিনি মানুষকে এতো ভালবাসেন বলেই সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে দূরে রাখতে আ’লীগ স্বৈরাচারী সরকার তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন। আমরা তার মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার চাই।
সাব্বিরের চাচা মোতালেব মিয়া বলেন, সাব্বিরের চিকিৎসার সব খরচও দিয়েছিলেন কায়কোবাদ দাদা। এখন আবার সহায়তা করছেন। আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ।
প্রতিবেশী সহিদ মিয়া জানান, সাব্বিরকে হারিয়ে তার মা দুই সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছিলেন। খবর পেয়ে সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন বলেন, আমাদের নেতা কায়কোবাদ বিদেশে থেকেও ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের খোঁজখবর নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। সাব্বিরের পরিবারের থাকার ঘর নেই। গণমানুষের নেতা কায়কোবাদ তাদের একটি ঘর করে দিচ্ছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিহত হওয়া মুরাদনগরের সাতজনের পরিবারকে পঞ্চাশ হাজার টাকা করে সহায়তা দিয়েছেন সাবেক এমপি কায়কোবাদ।