ঢাকা
৯ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
রাত ১০:২৪
logo
প্রকাশিত : জুলাই ৩১, ২০২৪

নড়াইল পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরা‘র বিরূদ্ধে দুদকের মামলা

হুমায়ুন কবীর রিন্টু , নড়াইল প্রতিনিধি: নড়াইল পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরা‘র বিরূদ্ধে মামলা করেছে দুদক। সম্পদের তথ্য গোপন করে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রদান এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এ মামলা করা হয়েছে বলে দুদক সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

মামলার এজাহারসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোরের উপ-পরিচালক মো. আল আমিন মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) নড়াইল জজ আদালতের বিচারকের কাছে মামলা সংশ্লিষ্ট কাজপত্রাদি হস্তান্তর করেন। এর আগে সোমবার (২৯ জুলাই) যশোর বিশেষ জজ আদালতে দুদক‘র পক্ষ থেকে নড়াইলের পৌর মেয়রের বিরূদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোর‘র উপ-পরিচালক মো. আল আমিন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলা বিবরণীতে বলা হয়েছে, দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৩২ লাখ ১৮ হাজার ৬শ ৯৮ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রদান এবং অবৈধভাবে ১৪ লাখ ৮৮ হাজার ৫শ ৩৪ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জন করে নিজ ভোগ-দখলে রাখা হয়েছে, যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

অভিযোগে আরও জানা যায়, মেয়র আঞ্জুমান আরা ১৯৮৭ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি লাভ করে ২০০০ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি প্রাপ্ত হন। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে স্বেচ্ছায় অবসরে যান। পরবর্তীতে আঞ্জুমান আরা ২০২১ সালের ৩০ জানুয়ারি নড়াইল পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি নড়াইল পৌরসভার মেয়র হিসেবে দ্বায়িত্বে আছেন।

দুর্নীতি দমন কমিশন ২০২৩ সালের ২৫ জানুয়ারি পৌর মেয়র আজুমান আরার প্রতি সম্পদ বিবরণী নোটিশ ফরম জারি করে। সম্পদ বিবরণী ফরম পূরণ করে তিনি ওই বছরের ১৯ মার্চ দুদকে দাখিল করেন। দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে আঞ্জুমান আরা নিজ নামে ৪ টি দলিলমূলে ক্রয় করা নড়াইল সদর উপজেলা এলাকায় মোট ১২৭.৫ শতক ডাঙ্গা/ধানী জমি, ১২০০ বর্গফুটের দ্বিতল বাড়িসহ মোট ৫৩ লাখ ৩৯ হাজার ৫শ টাকার স্থাবর সম্পদ থাকার তথ্য দেন। অস্থাবর সম্পদ হিসেবে ৫টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে গচ্ছিত ৭ লাখ ১৭ হাজার ৭শ ১২ টাকা ও সঞ্চয়পত্র কেনা ২৩ লাখ টাকা এবং মোট ৩০ লাখ ১৭ হাজার ৭শ ১২ টাকার অস্থাবরসহ সর্বমোট ৮৩ লাখ ৫৭ হাজার ২শ ১২ টাকার সম্পদ থাকার তথ্য ঘোষণা করেন। অভিযোগটি যাচাইকালে তার নামে ৫৩ লাখ ৩৯ হাজার ৫শ টাকার স্থাবর সম্পদ ও ৬২ লাখ ৩৬ হাজার ৪শ ১০ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ সর্বমোট ১ কোটি ১৫ লাখ ৭৫ হাজার ৯শ ১০ টাকার সম্পদ থাকার তথ্য পায় দুদক।

বিবরণীতে দুদক আরও উল্লেখ করে, কমিশন থেকে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট আঞ্জুমান আরার নামে সম্পদ বিবরণী নোটিশ জারির দিন ২০২৩ সালের ২৫ জানুয়ারি তারিখে তিনি ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, নড়াইল শাখায় পরিচালিত তার নামীয় হিসাব থেকে একটি চেকের মাধ্যমে নিজে ২৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা নগদে উত্তোলন করেন। ২০২২-২০২৩ করবর্ষে দাখিল করা আয়কর রিটার্নে ব্যবসা বহির্ভূত অর্থ সম্পদ হিসেবে ৩৩ লাখ ১ হাজার ৬শ ০১ টাকা দেখিয়ে জমা দেন। ওই টাকার মধ্যে তিনি ২০২৩-২০২৪ করবর্ষে দাখিল করা আয়কর রিটার্নে ব্যবসার পুঁজি ২৭ লাখ ৬২ হাজার ৫শ ৯৭ টাকা দেখিয়ে দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে গোপন করেন। এছাড়া আঞ্জুমান আরা তার দু‘টি ব্যাংক হিসাবে ১ লাখ ২৬ হাজার ১শ ১ টাকা ও আসবাবপত্র-ইলেক্ট্রনিক্স বাবদ ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা সর্বমোট ৩২ লাখ ১৮ হাজার ৬৯৮ টাকার তথ্য দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রদান করেন। যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

আরও জানা যায়, অভিযুক্ত মেয়র আঞ্জুমান আরার নামীয় আয়কর নথি (২০২১-২০২৪ পর্যন্ত- করবর্ষ) পর্যালোচনায় তার পৌর নির্বাচনী ব্যয়সহ পারিবারিক ব্যয় পাওয়া যায় ১৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। তার পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয়সহ তার মোট অর্জিত সম্পদের মূল্য ১ কোটি ২৮ লাখ ৯৫ হাজার ৯শ ১০ টাকা। আয়কর নথি ও অন্যান্য রের্কডপত্র অনুযায়ী আঞ্জুমান আরার মোট গ্রহনযোগ্য আয়ের পরিমাণ ১ কোটি ১৪ লাখ ৭ হাজার ৩শ ৭৬ টাকা। সে হিসেবে অভিযুক্ত মেয়র আঞ্জুমান আরার জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদের (অবৈধ সম্পদ) পরিমাণ দাঁড়ায় ১৪ লাখ ৮৮ হাজার ৫৩৪ টাকা।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যায় যশোর এর উপ-পরিচালক নাজমুস সাদাতের নেতৃত্বে একটি দল নড়াইল সদর পৌরসভায় বিভিন্ন খাত থেকে আদায় করা অর্থ ও এডিপি (বার্ষিক উন্নয়ন ফান্ড) এর মোট ৭৭টি চেকের মাধ্যমে ৩ কোটি ৩৫ লাখ ৩ হাজার ৬৭৭ টাকা আত্মসাতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রথম অভিযান পরিচালনা করেন।

নড়াইল পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরা দুদকের দায়ের করা মামলা সম্পর্কে বলেন, তিনি কোন অবৈধ সম্পদ অর্জন করেননি। তথ্য বিবরণীতে সম্পদের সঠিক তথ্য দিয়েছেন। কোন তথ্যই গোপন করেননি। তারপর কেন এ মামলা তা তার বোধগম্য নয় বলে জানান। তিনি আরোও বলেন, একটি স্বার্থান্বেষি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ চক্র তার বিরূদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তাদের যোগসূত্রে এ মামলা হতে পারে।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram