ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলার ঘটনায় তাদের ভূমিকাসহ বিভিন্ন অপরাধে ফৌজদারি অভিযোগ এনেছে যুক্তরাষ্ট্র।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) হামাসের ৬ নেতার বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ গঠন করেছে। অভিযুক্তদের মধ্যে তিনজন ইতিমধ্যে মৃত। তারা হলেন- হামাসের সাবেক রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়াহ, যাকে জুলাই মাসে তেহরানে হত্যা করা হয়েছিল; মোহাম্মদ দেইফ, যিনি জুলাই মাসে গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহত হন; এবং মারওয়ান ইসা, যাকে ইসরায়েল বলেছে যে তারা মার্চ মাসে একটি হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে।
জীবিত আসামিরা হলেন- হামাসের নতুন নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার, যিনি গাজায় রয়েছেন বলে বিশ্বাস করা হয়; খালেদ মেশাল, যিনি দোহায় থাকেন ও হামাসের প্রবাসী অফিসের প্রধান; এবং আলি বারাকা, লেবাননে অবস্থিত হামাসের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা।
মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘এই আসামিরা ইরান সরকার এবং লেবাননের হিজবুল্লাহর সহায়তায় ইসরায়েলকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে বেসামরিক লোকদের হত্যা করার জন্য হামাসের প্রচেষ্টাকে নেতৃত্ব দিয়েছে।’
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামাস নেতাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ এমন সময় আনা হলো, যখন হোয়াইট হাউস বলছে যে, তারা গাজায় যুদ্ধের অবসান ঘটাতে মিশর এবং কাতারের প্রতিনিধিদের সাথে মিলে একটি নতুন যুদ্ধবিরতি এবং বন্দী বিনিময় চুক্তির প্রস্তাব তৈরি করছে।
আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব বৈরুতের বিশিষ্ট ফেলো রামি খাউরি বলেন, হামাসের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থান চলমান সংঘাতে তার মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র হামাস নেতাদের বিচার করতে চাইলেও গাজায় গণহত্যা, শিশুহত্যার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করতে আগ্রহী নয়।
খাউরি আরও বলেন, বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ জানেন, যুক্তরাষ্ট্র সৎ মধ্যস্থতাকারী নয়, বরং ইসরায়েলের গণহত্যা কর্মকাণ্ডের সহায়তাকারী।
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের হামলায় এক হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হন। তাদের মধ্যে ৪০ জনের বেশি মার্কিন নাগরিক ছিলেন। এ ছাড়া ওই দিন দুই শতাধিক মানুষকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস যোদ্ধারা। পরে ওই দিনই হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তখন থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৪০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।