পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে রক্ষা পেলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও তার সরকার। ট্রুডোর জনপ্রিয়তা বা অনুমোদনের হার পড়ে যাওয়ার পর স্থানীয় সময় বুধবার বিকেলে বিরোধী দল কনজার্ভেটিভ পার্টি তার বিরুদ্ধে এই প্রস্তাব উত্থাপন করে। এদিন তিনি রক্ষা পেলেও আরও কয়েক দফায় তার বিরুদ্ধে এই প্রস্তাব আনা হবে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। পার্লামেন্টে আরও দুটি বিরোধী দল নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি) এবং ব্লোক কুইবেকোইস-এর সমর্থন আদায় করে ট্রুডো সরকারের পতন আশা করেছিলেন বিরোধী দলীয় রেতা পিয়েরে পোইলিয়েভরে। কিন্তু তাতে তিনি ব্যর্থ হন।
উল্লেখ্য, ৯ বছর ধরে কানাডায় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তিনি সংখ্যালঘু একটি সরকারের নেতৃত্বে দিচ্ছেন। অর্থাৎ তার সরকার খুব দুর্বল। কোনোমতে জোড়াতালি দিয়ে সরকার টিকিয়ে রেখেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব বুধবার ব্যর্থ হওয়ার পর কনজারভেটিভ পার্টি আরও কমপক্ষে দু’দফা একই প্রস্তাব আনার পরিকল্পনা করছে। আজ বৃহস্পতিবারই এই প্রস্তাব আনার কথা। যদি তাতে সফল হয় বিরোধী দল তাহলে কানাডায় নির্বাচন অত্যাসন্ন হয়ে পড়বে।
ট্রুডো যখন নির্বাচিত হন তখন তার জনসমর্থন ছিল শতকরা ৬৩ ভাগ। কিন্তু এ বছর জুনে তা কমে দাঁড়ায় ২৮ ভাগে। ধারণা করা হয়, আবাসিক অসামর্থ এবং জীবন ধারণের খরচ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে তার এই জনসমর্থন কমেছে। এই গ্রীষ্মে টরন্টো এবং মনট্রিলে দুটি উপনির্বাচনে পরাজিত হয়েছে তার দল লিবারেল পার্টি। ২০২১ সালে কানাডায় সর্বশেষ ফেডারেল নির্বাচন হয়। তারপর তার দল এবং এনডিপির মধ্যে একটি চুক্তি ট্রুডোকে ক্ষমতা ধরে রাখতে সহায়তা করেছে। কিন্তু এই জোট থেকে সেপ্টেম্বরে বেরিয়ে যান এনডিপি নেতা জগজিৎ সিং। ফলে জোটের সঙ্গে চুক্তি ভেঙে যায়।
জনজিৎ সিং অভিযোগ করেন যে, লিবারেলরা শাসন করার ক্ষেত্রে খুবই দুর্বল এবং খুবই আত্মকেন্দ্রিক। তারপর থেকেই ট্রুডোর নেতৃত্ব হুমকিতে রয়েছে। কনজার্ভেটিভ পার্টির নেতা পিয়েরে পাইলিয়েভরে বলেছেন, তিনি অনাস্থা ভোট আহ্বান করবেন। এমন ঘোষণায় আরও নড়বড়ে হয়ে পড়েছেন ট্রুডো। কানাডার পার্লামেন্টে আসন সংখ্যা ৩৩৮। কেনো প্রস্তাব অনুমোদন পেতে হলে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট প্রয়োজন। এতে ট্রুডোর লিবারেল পার্টির আসন আছে ১৫৩টি। তারা অনাস্থা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। অন্যদিকে কনজারভেটিভ পার্টির আছে ১১৯টি আসন। তারা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। কিন্তু এনডিপি এবং ব্লক কুইবেকোইস প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়। ফলে ২১১ ভোটে প্রস্তাব বাতিল হয়।