ঢাকা
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
দুপুর ২:২৪
logo
প্রকাশিত : নভেম্বর ৩, ২০২৪

দেশেই তৈরি হচ্ছে বিশ্বমানের ফার্নিচার, রপ্তানি ১২০ মিলিয়ন ডলার

আধুনিক জীবনের অপরিহার্য উপকরণ হিসেবে দেশে দ্রুত বড় হচ্ছে ফার্নিচারের বাজার। ক্রেতাদের রুচি আর চাহিদা ঘিরে গড়ে উঠেছে বিপুলসংখ্যক ব্র্যান্ডের কম্পানি। সেই সঙ্গে ভালো ব্যবসা করছে নন-ব্র্যান্ডের প্রতিষ্ঠানগুলোও। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ২০২২ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফার্নিচারের অভ্যন্তরীণ বাজার প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার।

এই খাতে রপ্তানিতেও সাফল্য কিছুটা আসছে, যদিও উচ্চ শুল্ক-করের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে সুবিধা করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, একটা সময় ফার্নিচারের ব্র্যান্ড হিসেবে অটোবির একচেটিয়া পরিচিতি ছিল। এখন তার সঙ্গে যোগ হয়েছে হাতিল, আকতার, পারটেক্স, নাভানা, ব্রাদার্স, নাদিয়া, রিগ্যাল, লিগ্যাসি, ইসোর মতো আসবাব প্রস্তুতকারী কম্পানিগুলো। তবে দামের প্রসঙ্গ এলে পাওয়া যাচ্ছে ক্রেতাদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

অনেকেই বলছেন, ব্র্যান্ডের ফার্নিচারের দাম বেশি হলেও গুণগত মান ভালো। তবে আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন ফার্নিচার পেতে ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতেই যেতে হবে। সম্প্রতি রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশনসিটি বসুন্ধরায় বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতির পক্ষে পাঁচ দিনের একটি মেলার আয়জন করা হয়েছিল।

মেলায় খিলগাঁও থেকে আসা নটর ডেম কলেজের শিক্ষক বিপ্লব কুমার দেব বলেন, ‘ব্র্যান্ডের পণ্যে আস্থা রাখা যায়।

এদের একটা ইমেজ তৈরি হয়েছে। এখানে যেসব পণ্য দেখা যাচ্ছে সেগুলো যদি নন-ব্র্যান্ডের দোকান থেকে কেনা যায়, দেখা যাবে সেখানে অর্ধেক দামে বানিয়ে দেবে। কিন্তু কেনার ক্ষেত্রে দেখা যায়, ব্র্যান্ডের পণ্য কিনছি। কেন? কারণ এদের আবার ফিনিশিং ভালো হয়। দেখা যায়, নন-ব্র্যান্ডের ফার্নিচার কিনতে গেলে ফিনিশিংয়ে একটু ঘাটতি থেকে যায়।

একটি বেসরকারি এয়ারলাইনসের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মো. নাজমুল হক বলেন, ‘ব্র্যান্ডের কারণে দামটা একটু বেশি থাকে। লোকাল মার্কেটের চেয়ে এখানে দাম বেশি হবে। কিন্তু মানটা ভালো থাকে।’

দেশের বাজারে শীর্ষস্থান দখল করে নিয়েছে হাতিল ফার্নিচার। সেই সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে হাতিলের ফার্নিচার। ভারত, নেপাল ও ভুটানে বিশাল বাজার দখল করে আছে বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া এই ব্র্যান্ডটি। হাতিল ফার্নিচারের রিটেইল অপারেশন ম্যানেজার লায়লা ইসরাত জাহান রুশী বলেন, ‘ফার্নিচারের ক্ষেত্রে আমরা ভালো মান নিশ্চিত করি।

হাতিল একটা ব্র্যান্ড, এখানে মান নিয়ন্ত্রণের একটা ব্যাপার আছে। গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করি। কাঠের পাশাপাশি আমরা মেটালের কিছু পণ্য নিয়ে এসেছি। আমরা ফরেস্ট স্টুয়ার্ডশিপ কাউন্সিলের (এফএসসি) সার্টিফায়েড কাঠ ব্যবহার করছি। অর্থাৎ বনায়ন ধ্বংস করে এমন কাঠ ব্যবহার না করে পণ্য তৈরি করছি। আর কাঁচামাল যেগুলো আমরা ব্যবহার করি সেগুলো আমদানি করে নিয়ে আসা। ফলে ওখানে খরচ বেশি হয়। আমাদের পণ্যের মান, ফিনিশিং, ডিজাইন ও সর্বোচ্চ গ্রাহকসেবা দেওয়ার ওপর পণ্যের দাম নির্ধারণ করা হয়।’

ফার্নিচার রপ্তানি

একসময় ফার্নিচার বিদেশ থেকে আমদানি করা হতো। কিন্তু সেই ধারা থেকে বেরিয়ে এসেছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। এখন নিজেরাই সব ধরনের আসবাব তৈরি করছেন। চেষ্টা করছেন ডিজাইনে আধুনিকতা নিয়ে আসতে। ফলে এই খাতের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রায় ২৫ লাখ শ্রমজীবী, যা গার্মেন্টসশিল্পের অর্ধেক। কিন্তু সে তুলনায় রপ্তানি আয় বাড়ানো যাচ্ছে না। গত অর্থবছরে মাত্র ১২০ মিলিয়ন ডলার এই খাত থেকে আয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন রপ্তানিকারকরা।

আর বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ফার্নিচার খাতের সমস্যা, সুযোগ ও বিনিয়োগ আকর্ষণ বাড়ানো নিয়ে একটি ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করে। ওই কমিটির দেওয়া ২০২২ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশে ছোট-বড় প্রায় ৪০ হাজার ফার্নিচার প্রস্তুত ও বিক্রির প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ৬৫ শতাংশই নন-ব্র্যান্ড।

২০১২-১৩ অর্থবছরে ফার্নিচার খাতের রপ্তানি ছিল ৩১.৪১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিন্তু ৯ বছর পর ২০২১-২২ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১১০ মিলিয়ন ডলার। আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২০ মিলিয়ন ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের ৬১টি দেশে ফার্নিচার রপ্তানি করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি রপ্তানি আয় হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে, যা মোট আয়ের ৫০ শতাংশ।

একইভাবে জাপান থেকে ১৬ শতাংশ, ফ্রান্স থেকে ৯ শতাংশ, ভারত থেকে ৪ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ৩ শতাংশ, কানাডা ও সৌদি আরব থেকে ২ শতাংশ করে এবং অন্যান্য দেশে ৯ শতাংশ। আন্তর্জাতিক বাজার প্রায় ৭০০ বিলিয়ন ডলারের। সেই তুলনায় আয় খুব সামান্য হলেও ধারাবাহিকভাবে আয় বাড়ছে।

logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram