ঢাকা
৭ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সন্ধ্যা ৬:৩৩
logo
প্রকাশিত : নভেম্বর ২৫, ২০২৪

হাসিনাকে দেশে ফেরানো এখনও এজেন্ডায় নেই

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আগামী মাসেই হতে হচ্ছে ঢাকায় বাংলাদেশ-ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় প্রথম বৈঠক। এতে বাণিজ্য, সীমান্ত পরিস্থিতি, নিরাপত্তা, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন ও ভিসা ইস্যুসহ দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে ভারতের আশ্রয়ে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর বিষয়টি আলোচনার এজেন্ডায় নেই।

এ বিষয়ে আলোচনা হবে কিনা- সিদ্ধান্ত পেতে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের দিকে তাকিয়ে আছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, শেখ হাসিনার বিষয়টি নিয়ে ভারতের আলোচনার সম্ভাবনা ক্ষীণ। এ ছাড়া কূটনৈতিক রীতি অনুযায়ী পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশেরও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা না। বৈঠকে পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়গুলোই বেশি গুরুত্ব পেতে পারে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সাড়ে তিন মাস প্রায় শেষ।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ভারতের সঙ্গে হওয়া চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকগুলো পর্যালোচনার বিষয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অগ্রগতি সীমিত। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কেও তেমন উন্নয়ন হয়নি। এ ছাড়া গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনার বিষয়েও বর্তমান সরকারকে তেমন কিছু জানায়নি ভারত।

বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কোন্নয়নের বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ও সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির গতকাল বলেন, দুই দেশের বর্তমান সম্পর্কের পরিবর্তন হবে কিনা বলা মুশকিল। তবে যেহেতু উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক, তাই আলাপ-আলোচনার সুযোগ আছে। পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের মিটিংয়ে সব বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে দুই দেশের রাজনীতি, বাণিজ্য, নিরাপত্তা ও অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনবিষয়ক আলোচনা গুরুত্ব পেতে পারে। শেখ হাসিনার ফেরানোর আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা যেটা বলেছেন, বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে এটা জড়িত। এই বিষয়ে আলোচনা হলেও হতে পারে। তবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া আরও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।

জানা গেছে, ঢাকায় অনুষ্ঠেয় এই বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন ও ভারতের পক্ষে পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি নেতৃত্ব দেবেন। আলোচনায় বাণিজ্য, নিরাপত্তা সহযোগিতা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা এবং আঞ্চলিক সংযোগ বাড়ানোর বিষয়গুলো স্থান পাবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশে ভারতে ভিসা সেন্টার পুরোপুরি চালুর বিষয়েও আলোচনা হতে পারে।

তবে শেখ হাসিনাকে ফেরানোর বিষয়ে আলোচনা তোলার বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন- কূটনৈতিক শিষ্টাচার অনুযায়ী এত দ্রুত এই ইস্যুতে দুই দেশের আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা কম। ভারত এই ইস্যু নিয়ে আলোচনা তুলবে না। বাংলাদেশের মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে আলোচনার সিদ্ধান্ত নেয়নি। মন্ত্রণালয় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছে। একসঙ্গে বিষয়টি আলোচনায় তুললে বাংলাদেশের প্রস্তাব গ্রহণের সম্ভাবনা কতটুকু, সেই বিষয়টিও মাথায় নিতে হবে। অযথা আলোচনা তুলে অন্য বিষয়ে গুরুত্ব কমে যাবে কিনা, সেটা বিবেচনায় নিতে হবে। এই বৈঠকে মূলত পারস্পরিক সম্পর্কোন্নয়নের বিষয়টি বেশি গুরুত্ব পাবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তৌফিক হাসান গত বৃহস্পতিবার বলেন, সভায় কী কী বিষয় আলোচনায় আসবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এ ছাড়া হাসিনাকে ফেরানোর বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনও সরকারিভাবে কোনো নির্দেশনা পায়নি। বিষয়টি রাজনৈতিক। সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এ বিষয়ে নির্দেশনা পাওয়া মাত্র পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রায় সাড়ে তিন মাসে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের দৃশ্যমান উন্নতি কম। ঢাকায় দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকের মধ্য দিয়ে সম্পর্কে ‘গতিশীলতা’ আসবে বলে আশা করছে সরকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মুখপাত্র তৌফিক হাসান বলেন, ‘ফরেন অফিস কনসালটেশন’ (এফওসি) নামে পরিচিত পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কটা গতিশীলতা পাবে।

জানা গেছে, পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকের বিষয়ে এরই মধ্যে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়েছে। আলোচনায় কোন কোন বিষয় অগ্রাধিকার পাবে, তা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। ঢাকা এজেন্ডাগুলো ঠিক করে দিল্লির কাছে পাঠাবে। পরে দিল্লি কোন কোন এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা করবে, মতামত জানাবে। এরপর দুই পক্ষ আলোচনার এজেন্ডাগুলো ঠিক করে বৈঠকে তুলবে। বৈঠকে বেশি গুরুত্ব পেতে পারে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কোন্নয়নের দিকগুলো।

তবে ভারতের গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ডিসেম্বরের শুরুতে বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে ভারতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়টি অন্যতম আলোচ্য বিষয় হতে পারে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ও কূটনৈতিক বিশ্লেষক ড. সি আর আবরার বলেছেন, ভারতের জন্য এটি কঠিন সিদ্ধান্ত। শেখ হাসিনা ভারতের দীর্ঘদিনের মিত্র ছিলেন। তার সময়ে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক বিশেষত সীমান্ত নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে অত্যন্ত ইতিবাচক ছিল। এখন তাকে ফিরিয়ে দিলে ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram