ঢাকা
১০ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সকাল ৮:১৮
logo
প্রকাশিত : নভেম্বর ৩০, ২০২৪

পাগলা মসজিদের মোট টাকার পরিমাণ জানাতে নারাজ প্রশাসন

‘২০২৪ সালের বিপ্লবের পর আমরা ছাত্র-জনতা সবকিছুর মধ্যেই অংশগ্রহণ করি এবং খোঁজ-খবর নিই, এখানে কোনো অনিয়ম দুর্নীতি হচ্ছে কি না। এরই ধারাবাহিকতায় বিপ্লবের পর পাগলা মসজিদের দানবাক্স খোলার মতো কোনো পরিস্থিতি ছিল না।

কিশোরগঞ্জসহ সারাদেশের মানুষ জানতে চাচ্ছিল বছরের পর বছর পাগলা মসজিদের দানবাক্সে কোটি কোটি টাকা আসছে। এই টাকা কোথায় রাখা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত পাগলা মসজিদের কত কোটি টাকা রয়েছে। এই টাকা কোথায় ব্যয় হচ্ছে। দেশের মানুষ এবং কিশোরগঞ্জের আপামোর ছাত্র-জনতা প্রশ্ন তুলেছিল। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখ এবং পরিতাপের বিষয় এখন পর্যন্ত কিশোরগঞ্জের প্রশাসন যারা পাগলা মসজিদের দায়িত্বে রয়েছে তারা এটা ক্লিয়ার করেনি। কত টাকা আসছে, সোনা-রুপা কী আসছে, বৈদেশিক মুদ্রা কী আসছে, ওই টাকা কোথায় রাখা হচ্ছে। কাদের মাধ্যমে রাখা হচ্ছে, কোথায় ব্যয় করা হচ্ছে। পাগলা মসজিদ নিয়ে এই যে মানুষের আস্থা এবং বিশ্বাসের জায়গা, এটা নিয়ে লুকোচুরি করা হচ্ছে।’

শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পাগলা মসজিদের টাকা গণনার সময় এসব অভিযোগ তোলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কিশোরগঞ্জের অন্যতম সমন্বয়ক ইকরাম হোসেন।

অভিযোগ করে ইকরাম হোসেন আরও বলেন, আমরা বিভিন্নভাবে জানতে পেরেছি অতীতে যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল, তারা বিভিন্ন প্রজেক্টের মাধ্যমে বিভিন্ন ছলচাতুরির মাধ্যমে পাগলা মসজিদের টাকা সরিয়েছে। আমি স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, যারা পাগলা মসজিদের দায়িত্বে রয়েছেন তারা যদি অনতিবিলম্বে দেশবাসীর কাছে পাগলা মসজিদের অর্থের বিষয়টি স্পষ্ট না করেন তাহলে কিশোরগঞ্জের ছাত্র-জনতাসহ এদেশের মানুষ এই হিসাব নেবে ইনশাআল্লাহ।

তিনি আরও বলেন, আমরা গত তারিখে জানতে চেয়েছিলাম পাগলা মসজিদের অ্যাকাউন্টে কত টাকা রয়েছে? এই টাকা কোথায় রক্ষিত রয়েছে? এই টাকা কোথায় কোথায় ব্যয় করা হয়? ওনারা বলেছিলেন এগুলো স্পষ্ট করবে। কিন্তু আমরা দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখতে পাইনি ও জনসম্মুখে কোনো কিছুই প্রকাশ করা হয়নি।

সমন্বয়ক ইকরাম হোসেন আরও বলেন, আপনারা লক্ষ্য করেছেন বিপ্লবের পরে যখন টাকা গণনা করা হয়েছিল, ধরা পড়েছিল যে এখান থেকে টাকা চুরি করা হয়েছে গণনার সময়। পরে তারা এটাকে লামছাম দিয়ে সমাধান করেছে।

তিনি আরও বলেন, কথা ছিল টাকা গণনার সময় সব রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠন কিশোরগঞ্জকে যারা রিপ্রেজেন্ট করে, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে যারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে তাদের নিয়েই এই দানের টাকা গণনার কার্যক্রমটি হবে। আজ যখন দানবাক্স খোলা হয় আমাদের ছাত্র-জনতাসহ কোনো সংগঠনকেই তারা জানায়নি। যারা প্রশাসনে রয়েছে তাদের আচরণ অনেকটাই লুকোচুরির মতো। যারা এই মসজিদের দায়িত্বে রয়েছে তারা কীভাবে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। তারা ফুলে-ফেঁপে কলা গাছ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের স্পষ্ট কথা যদি প্রশাসন থেকে সুস্পষ্ট কোনো তথ্য প্রমাণ না দেওয়া হয়, হিসাব প্রকাশ না করা হয়, তাহলে কিশোরগঞ্জসহ সারাদেশের ছাত্রজনতাকে সঙ্গে নিয়ে আমরা এর হিসাব নিশ্চিত করবো।

এর আগে তিন মাস ১৪ দিন পর শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকাল ৭টায় পাগল মসজিদের ১০টি দানবাক্স ও একটি ট্রাঙ্ক খোলা হয়েছে। এতে পাওয়া গেছে রেকর্ড ২৯ বস্তা টাকা।

টাকা গণনাকালে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খানকে সংবাদকর্মীরা প্রশ্ন করেন, পাগলা মসজিদের অ্যাকাউন্টে সর্বমোট কত টাকা রয়েছে? কিন্তু তিনি এই প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই চলে যান।

পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত উদ্দিন ভূইয়াকেও প্রশ্ন করা হয় পাগলা মসজিদের অ্যাকাউন্টে সর্বমোট কত টাকা রয়েছে? তিনিও এই প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি হননি।

তিনি জানান, এটা আমি বলতে পারবো না। মাননীয় জেলা প্রশাসক এটার সভাপতি। উনার নিয়ন্ত্রণে থাকে। আমাদের জানতে দেন না। অ্যাকাউন্টটি স্যার নিজে মেনটেইন করেন।

ওয়াকফ এস্টেট কিশোরগঞ্জের ওয়াক্ফ হিসাব নিরীক্ষক মো. আলাউদ্দিনকেও একই প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, পাগলা মসজিদের অ্যাকাউন্টে মোট কত টাকা রয়েছে এ বিষয়টি আমি এখন আপনাদের বলবো না। জেলা প্রশাসক মহোদয় কিছুক্ষণ আগে এই প্রশ্নের উত্তর দেননি, আমিও দেবো না। এটা সরকারের সিকিউরিটির ব্যাপার। গত অর্থবছর পাগলা মসজিদ থেকে সরকার রাজস্ব পেয়েছে ১ কোটি ৫৩ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা।

রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলামের কাছেও জানতে চাওয়া হয় পাগলা মসজিদের অ্যাকাউন্টে মোট কত টাকা রয়েছে। তিনি জানান, ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী আমি তা বলতে বাধ্য নই। অ্যাকাউন্টের মূল হিসাব একমাত্র অ্যাকাউন্টের মালিকের জানার অধিকার রয়েছে।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram