রমজান আলী, সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওচমান আলী সরকারি টাকা পকেটে নিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন।
চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সরকারি অর্থায়নে নির্মিত ৫টি দোকানের অগ্রিম ২০ লাখ টাকা নেওয়ার পর এখনো জমা করেনি ইউনিয়ন পরিষদের ব্যাংক একাউন্টে।
গোপন সূত্রে জানা যায়, কেরানীহাটে অবস্থিত কেঁওচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সরকারি অর্থায়নে নির্মিত ৫টি পাকা দোকান রয়েছে। যে দোকান থেকে কেঁওচিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওচমান আলী দোকানদারের কাছ থেকে প্রায় ১০ মাস আগে চুক্তিপত্রের মাধ্যমে ৪ লাখ টাকা করে মোট ২০ লাখ টাকা আদায় করেন। যে টাকার মালিক ইউনিয়ন পরিষদ কিন্তু এখনো জমা হয়নি ইউনিয়ন পরিষদের ব্যাংক একাউন্টে।
নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক কেঁওচিয়া ইউনিয়নে এক ইউপি সদস্য বলেন, চেয়ারম্যান এবং সচিব মিলে তাদের কাছ থেকে চুক্তিপত্রের মধ্যেমে ২০ লাখ টাকা নিয়েছিল কিন্তু ঐ টাকা হিসেব কাউকে দেনি তারা। বতর্মান এ টাকা গুলো কোথায় আছে আমরা জানি না। ইউনিয়ন পরিষদের কোন বিষয় আমাদের কে তারা বলতো না। তারা নিজেরা সবকিছু করে ফেলতেন। বিগত সরকারের আমলে আমাদের কে এক টাকারও মূল্য দেনি সচিব এবং চেয়ারম্যান।
ব্যবসায়ী'রা জানান, আমাদের কাছ থেকে প্রতিটি দোকানের বাবদ অগ্রিম ৪ লাখ টাকা নিয়েছে এবং প্রতিমাসে ৮হাজার টাকা করে ভাড়া ধার্য করেন। চেয়ারম্যান ৫/৬ মাসের ভাড়া নিয়েছে, এখন কাউকে ভাড়া দিতেছি না। তারা আরও জানান, ইউনিয়নে পরিষদের অধীনে ৫টি দোকান রয়েছে, প্রতিটি দোকান থেকে ৪ লাখ টাকা করে ২০ লাখ টাকা নেন চেয়ারম্যান।
ইউপি সচিব অসিম কুমার ধর এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২০ লাখ টাকা গুলো চেয়ারম্যান নিয়েছে, ইউনিয়েন পরিষদের একাউন্টে জমা হয়নি। কেন জমা হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, টাকা গুলো নগদে রয়েছে। ইউনিয়েন পরিষদের টাকা হাতে রাখার সুযোগ আছে কিনা জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, সুযোগ নেই, তবে কিছু দিনের ভিতরে জমা হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান ওচমান আলী বলেন, যে দোকান গুলো ভাড়া দিয়েছি তার আমাকে এক সাথে টাকা গুলো দেয়নি, যার কারনে ইউপি পরিষদে ব্যাংকে রাখার সুযোগ হয়নি। আমরা চেয়েছিলাম আমাদের ইউনিয়ন পরিষদে ২তলা ভবন নির্মাণের জন্য টাকা গুলো রেখেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ সরকার পরিবর্তন হওয়ার কারনে করা হয়নি। তাবে টাকা গুলো কেঁওচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের একাউন্টে জমা হয়ে যাবে। কখন হবে সেটা নির্দিষ্ট করে বলেনি।
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন বিশ্বাস বলেন, এই বিষয়ে আমি জানতাম না তবে আপনাদের মধ্যে জানতাম পারলাম। সরকারী টাকা কোন ব্যক্তির হাতে রাখার সুযোগ নেই। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।