শিবব্রত চক্রবর্ত্তী, পরশুরাম (ফেনী) প্রতিনিধি: ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রংচটা লক্কর-ঝক্কর বাস। আসন সংখ্যা বাড়াতে অনেক বাসে পরিবর্তন করা হয়েছে গাড়ির নকশা। ঝুঁকিপূর্ণ এসব যানবাহনের কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। কিছুদিন আগেও ফেনী থেকে পরশুরাম গামী একটি বাস পুরাতন মুন্সির হাট বাজারে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি মুদি দোকানে ঢুকে পড়ে। এতে ঘঠেছে হতাহতের ঘটনা। পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ যানবাহনের নকশা বদল।
এই রুটে চলাচলকারী বেশীরভাগ বাসেরই বেহাল দশা। কোনটির এক অংশ খুলে পড়েছে তো কোনোটা দুমড়ানো মোচড়ানো। রং সে তো বহুদিন আগেই চটে গেছে। নেই সাইড ইনডিকেটর কিংবা ব্রেক লাইট। ভেতরে বসার আসনগুলোও নড়বড়ে ও ছেঁড়া। ফিটনেসবিহীনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে অবৈধ যানবাহন। করোনাকালেও তাদের দাপট একটুও কম ছিলনা। চলার অযোগ্য বাসগুলোকে রং করে আবার নামানো হয় রাস্তায়।
কয়েকটি ওয়ার্কশপ ঘুরে দেখা যায়, মেয়াদহীন যানবাহনগুলো ঘসা মাজা চলছে। শুধু তাই নয় নকশা পরিবর্তন করে বাড়ানো হচ্ছে বাসের আসন সংখ্যা আর আকার। গাড়ি মেরামত করা শ্রমিকরা বলেন, এখানে গাড়ি নিয়ে আসে। তারপর আমরা তা রং করে দেই। গাড়ির সিট বানানোর কথা বলেন মালিকরা। তাই আমাদের কিছু করার নেই। এদিকে বাস গুলোতে ৩৬ সিটের ধারণ ক্ষমতা থাকলেও অনেক বাস গুলোতে করা হয়েছে বেশি সিট।
এ বিষয়ে বাসের যাত্রী মোঃ ইউনুছ বলেন, সড়কে এমন যানবাহন থাকলে তা নিষিদ্ধের দায়িত্ব বিআরটিএর। ৩৬ সিটের জায়গাই যদি বেশি সিট করে থাকে তাহলে এটা আইন বহির্ভূত। তবে বাস রাস্তায় নামলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাধারণ যাত্রীরা। পরিবহন বিশেষজ্ঞরা চোখে দেখে ফিটনেস না দিয়ে অটোমেশনের মাধ্যমে ফিটনেস দেয়ার পরামর্শ দীর্ঘদিন ধরে দিয়ে আসলে ও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
লক্কর-ঝক্কর বাস নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নিয়মিত যাত্রী ও সরকারী কর্মকর্তা বলেন, চোখে দেখে ফিটনেস না দিয়ে অটোমেশনের মাধ্যমে ফিটনেস দেখার প্রয়োজন। এতে করে নকশা বদলানোর বিষয়টি ধরা সম্ভব। একজন মানুষ ৫ মিনিটে অনেকগুলো গাড়ি দেখছে। এই নিয়ম আসলে তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়। এ ছাড়া সড়ক আইনে সড়কে ২০ বছরের পুরোনো বাস মিনিবাস চলাচল নিষিদ্ধ হলেও কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে অথবা তাদের ম্যানেজ করে অতি পুরোনো গণপরিবহন চলছে বলেও জানান নিয়মিত চলাচল কারী যাত্রীসহ স্হানীয় জনগণ।
এর প্রেক্ষিতে পরশুরাম বাস মালিক সমিতির সভাপতিকে তার মোবাইলে ফোন দিলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন রেখে দেন।
নিয়মিত যাত্রীরা জানান, এই বাস গুলোতে করে প্রতিদিন অসংখ্য যাত্রী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরশুরাম-ফেনীতে যাতায়াত করেন। অবিলম্বে বাস গুলোকে আধুনিক এবং ঝুঁকি মুক্ত করে এবং ফিটনেস অনুমোদন নিয়ে রাস্তায় চালানোর জন্য দাবী জানায়।