পাইলস মূলত মলদ্বারের একটি রোগ। মলদ্বার এবং এর আশপাশের রক্তনালিগুলোর প্রদাহ বা ফুলে ওঠা অবস্থাকে পাইলস বলে। এটি খুব সাধারণ সমস্যা হলেও বেশ অস্বস্তিকর। এই সমস্যা সাধারণত দুই ধরনের হয়।
একটি ইন্টারনাল পাইলস বা মলদ্বারের ভেতরের সমস্য। অন্যটি এক্সটারনাল পাইলস বা মলদ্বারের বাইরের অংশের সমস্যা।
পাইলসের সাধারণ লক্ষণ
রক্তপাত : পাইলসের রোগীর মলত্যাগের সময় বা মলের সঙ্গে সামান্য রক্তপাত হতে পারে।
অস্বস্তি ও ব্যথা : এক্সটারনাল পাইলসের ক্ষেত্রে মলদ্বারের আশপাশে ব্যথা এবং অস্বস্তি দেখা দেয়।
ভেতরের পাইলসের ক্ষেত্রে প্রায়ই ব্যথা কম থাকে।
চুলকানি ও জ্বলুনি : মলদ্বারের আশপাশে অনেক সময় চুলকানি ও জ্বলুনি অনুভূত হতে পারে।
স্ফীত অংশ অনুভব করা : এক্সটারনাল পাইলস হলে মলদ্বারের চারপাশ স্ফীত হয়ে ওঠে। যা স্পর্শ করলে বা বসার সময় অস্বস্তিকর হতে পারে।
কেন হয়
পাইলসের অনেক কারণ। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো অলসতা। দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকা, কায়িক পরিশ্রম না করলে পাইলস হতে পারে। খাদ্য তালিয়কায় আঁশযুক্ত খাবার কম থাকলে পাইলসের ঝুঁকি বাড়ে। পানি কম পান করা পাইলসের অন্যতম কারণ।
জাপানের কিয়োটো ইউনিভার্সিটি এবং যুক্তরাষ্ট্রের মায়ো ক্লিনিকের গবেষকরা এ বিষয়ে বেশ কিছু গবেষণা পরিচালনা করেছেন।
করণীয় কী
কিয়োটো ইউনিভার্সিটির গবেষকদের মতে, অতিরিক্ত চাপ ও মানসিক উদ্বেগ পাইলসের একটি বড় কারণ। মানসিক চাপ হজম প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটায় এবং মলত্যাগের সময় সমস্যা তৈরি করে।
অন্যদিকে মায়ো ক্লিনিকের গবেষণায় বলা হয়েছে, মলত্যাগের সময় অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ এবং আঁশযুক্ত খাবারের ঘাটতি পাইলসের অন্যতম কারণ। অর্থাৎ কোষ্ঠকাঠিন্য পাইলসের ঝুঁকি বাড়ায়।
পাইলস প্রতিরোধের জন্য প্রথমে নজর দিতে হবে খাবার এবং শারীরিক পরিশ্রমের দিকে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত আঁশযুক্ত খাবার, যেমন- ফলমূল, শাকসবজি এবং পানি খাওয়ার অভ্যাস করা দরকার। এ ছাড়া দীর্ঘ সময় বসে না থেকে মাঝে মাঝে হাঁটা এবং সহজ কিছু ব্যায়াম করার চেষ্টা করা উচিত।
এই সহজ পরিবর্তনগুলো দৈনন্দিন জীবনে অন্তর্ভুক্ত করে পাইলস থেকে নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব।
সূত্র : কিয়োটো ইউনিভার্সিটি, জাপান এবং মায়ো ক্লিনিক, যুক্তরাষ্ট্র