প্রাসাদ থেকে মুনাফা করার বিষয় নিয়ে এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের পর সমালোচনার মুখে পড়েছে ব্রিটিশ রাজপরিবার। অনুসন্ধানে উঠে আসে, ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস এবং তার বড় ছেলে ও সিংহাসনের উত্তরাধিকারী প্রিন্স উইলিয়াম রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি থেকে মুনাফা করছেন। রাজপরিবারের সদস্য হিসেবে কর দিতে হচ্ছে না তাদের।
যুক্তরাজ্যের টেলিভিশন নেটওয়ার্ক চ্যানেল ফোর ও সংবাদমাধ্যম দ্য সানডে টাইমস এ অনুসন্ধান করেছে। সংবাদমাধ্যম দুটির দাবি, প্রাসাদ থেকে মুনাফা করার বিষয়টি তারাই প্রথম তুলে আনল।
অভিযোগ ওঠার পরে রাজপরিবারের বিষয়ে স্বচ্ছতা ও রাজপরিবারের সদস্যদের ব্যক্তিগত সম্পত্তির বিষয়ে সংস্কারের দাবি উঠেছে।
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, শতাব্দীপ্রাচীন দুই প্রাসাদ ডাচি অব ল্যানচেস্টার ও ডাচি অব কর্নওয়াল ভাড়া দিয়ে মুনাফা করছেন রাজা তৃতীয় চার্লস ও প্রিন্স উইলিয়াম। দাতব্য প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন ব্যক্তি এসব প্রাসাদ ভাড়া নিয়ে বিপুল অর্থ দিচ্ছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা পরিবেশগত মানদণ্ড পূরণেও ব্যর্থ হয়ছে। দেশটির ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস) ছাড়াও অর্থসংকটে থাকা মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে লোভনীয় চুক্তি করে সেই অর্থ নিয়েছেন রাজা ও তার ছেলে।
অনুসন্ধানে রাজা ও তার ছেলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠার পর বিষয়টি পার্লামেন্টে পর্যালোচনার দাবি উঠেছে। রাজতন্ত্রবিরোধী অনেকে এসব প্রাসাদ সরকারের অংশ করে নেওয়ার দাবিও তুলছেন।
মধ্যপন্থী হিসেবে পরিচিত রাজনৈতিক দল লিবারেল ডেমোক্র্যাটস পার্টির সাবেক এমপি নরম্যান বেকার এএফপিকে বলেন, ‘রাজপরিবারের সদস্যরা যে জনগণের অর্থ নিজেদের করে নিচ্ছেন, আমি অনেক দিন ধরে তা বলে আসছি। এ অনুসন্ধানে তা নিশ্চিত হওয়া গেল। এসব তো জনগণের সম্পত্তি। ফলে এসব থেকে অর্জিত অর্থ জনগণের তহবিলে জমা হওয়া উচিত।’
অনুসন্ধানের বিষয়টি নিয়ে রাজপরিবার বিশেষজ্ঞ ইয়ান পেলহাম মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে বলেন, ‘ব্রিটিশ রাজপরিবারের জন্য এটা ওয়াটারগেটের মতো এক কেলেঙ্কারির ঘটনা হয়ে উঠতে পারে, বিশেষ করে রাজা তৃতীয় চার্লস ও প্রিন্স উইলিয়ামের জন্য। টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এই কেলেঙ্কারির খবরে দাবি করা হয়েছে, কোটি কোটি পাউন্ড তাঁরা মুনাফা করেছেন, কিন্তু তা প্রকাশ পায়নি।’