তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে আফগানিস্তান। এর ফলে ক্রিকেটের যেকোনো সংস্করণে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর স্বাদ পেল রশিদ-নবিরা। আগে ব্যাট করতে নেমে ফজল হক ফারুকি এবং আল্লাহ্ মোহাম্মাদ ঘজনফরের বোলিং তোপে ৩৩ দশমিক ৩ ওভারে মাত্র ১০৬ রানে গুটিয়ে যায় প্রোটিয়ারা। লক্ষ্য তাড়ায় হেসেখেলেই জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলে আফগানিস্তান। জয়ের সময় ৬ উইকেটের পাশাপাশি আফগানদের হাতে ছিল ১৪৪ বলও।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক এইডেন মার্করাম। আগে ব্যাট করতে নেমে ভয়াবহ ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। নিজের পরপর তিন ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার টপ অর্ডার তিন ব্যাটসম্যানকে বিদায় করেন ফারুকি। অনেক বাইরের বল স্টাম্পে টেনে আনেন রিজা হেনড্রিকস। স্লোয়ার বলে একইভাবে বোল্ড হন অধিনায়ক এইডেন মার্করাম। মিড অনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন টোনি ডি জোর্জি।
প্রতিপক্ষের মিডল অর্ডারে ছোবল দেন ঘজনফর। অষ্টম ওভারে জোড়া উইকেট নেন তৃতীয় ওয়ানডে খেলতে নামা এই অফ স্পিনার। ট্রিস্টান স্টাবস এই সংস্করণে তার প্রথম শিকার। পরে বিদায় করেন অভিষিক্ত জেসন স্মিথকে। দুইজনেই খুলতে পারেননি রানের খাতা।পাওয়ারপ্লে’র শেষ ওভারে কাইল ভেরেইনাকে এলবিডব্লিউ করে দেন ঘজনফর।
ওভারের শেষ বলে নাটকীয়ভাবে রান আউটে কাটা পড়েন আন্দিলে ফেলুকোয়াইয়ো। ঘজনফারের বল তার পায়ে লাগার পর এলবিডব্লিউয়ের আবেদন করেন বোলার ও উইকেটরক্ষক। বল কোথায় গিয়েছে তা বুঝতে না পেরে প্রথম ক্রিজে থাকলেও পরে এক-দুই পা বেরিয়ে যান ফেলুকোয়াইয়ো। সেই সুযোগে স্লিপে দাঁড়িয়ে কাছ থেকেই স্টাম্প ভেঙে দেন গুলবাদিন নাইব। বিস্ময়ের অভিব্যক্তি নিয়ে মাঠ ছেড়ে যান ফেলুকোয়াইয়ো।
মাত্র ৩৬ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলা প্রোটিয়াদের সামনে তখন নিজেদের দলীয় সর্বনিম্ন ৬৯ রানের আগে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা। সেই বিপর্যয় থেকে দলকে টেনে তোলেন উইয়ান মুল্ডার ও বিয়র্ন ফরচুইন। এ দু’জন মিলে দলকে নিয়ে যান ৭৫ রানে। এরপর ১৬ রানে ফেরেন ফরচুইন। এক প্রান্তে উইকেট পতন অব্যাহত থাকলেও, অন্য প্রান্তে দলকে আগলে ১০০ রান পার করান মুল্ডার।
তবে অন্যপ্রান্তে, ৮৪ বলে ৫টি চার ও একটি ছক্কায় ৫২ রান করেন মুল্ডার। যেকোনো ফরম্যাটে এটাই তার প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত ৩৩.৩ ওভারে ১০৬ রানেই অলআউট হয়ে যায় প্রোটিয়ারা। যা ওয়ানডেতে তাদের সপ্তম সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ। আফগানদের হয়ে বাঁহাতি পেসার ফারুকী ৭ ওভারে ৩৫ রানে ৪টি উইকেট নেন। ১০ ওভারে ২০ রানে ঘজনফরের শিকার ৩ উইকেট। ৮.৩ ওভারে ৩০ রানে ২ উইকেট নেন দলটির তারকা লেগ স্পিনার রশিদ।
সহজ টার্গেট টপকাতে নেমে শুরুতেই রহমানউল্লাহ গুরবাজকে হারায় আফগানিস্তান। গুরবাজের পর দ্রুত বিদায় নেন তিনে নামা রহমত শাহও। আরেক ওপেনার রিয়াজ হাসান ৩৫ বল খেলে করেন ১৬ রান। অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদিও সমান ১৬ রানের ইনিংস খেলে ফিরে যান প্যাভিলিয়নে।
দলীয় ৬০ রানে চতুর্থ উইকেট হারানো আফগানিস্তানকে এরপর জয়ের বাকি পথটা এগিয়ে নিয়ে গেলেন গুলবেদিন নাইব আর আজমতউল্লাহ ওমরজাই। ৪৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে ২৪ ওভার আগেই তারা দলকে এনে দিলেন ৬ উইকেটের জয়। ওমরজাই ২৫, গুলবেদিন ২৭ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন।