১৯৯৬ সালে ভারত-শ্রীলঙ্কার সাথে যৌথভাবে বিশ্বকাপের আয়োজন করেছিল পাকিস্তান। আসরের ফাইনালও গড়িয়েছিল লাহোরের বিখ্যাত গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে। এরপর কেটে গেছে প্রায় তিন দশক। আইসিসির একাধিক বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট চালু হয়েছে। আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পাশাপাশি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। উপমহাদেশের অন্য তিন দেশ বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা সবাই আয়োজন করেছে এই টুর্নামেন্টগুলো। ব্যাতিক্রম পাকিস্তান। ২০০৯ সালে লাহোরে লঙ্কান ক্রিকেটারদের ওপর হামলার পর থেকে দেশটিতে নির্বাসিত ছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। ২০১১ বিশ্বকাপ আয়োজনের থাকলেও সহ-আয়োজকের তালিকা থেকে বাদ পড়ে যায় তারা।
সবশেষ এশিয়া কাপ আয়োজনের ক্ষেত্রেও বাধে বিপত্তি। প্রতিবেশী ভারত সেখানে খেলতে যেতে না চাইলে হাইব্রিড মডেলে শুরু হয় টুর্নামেন্টটি। কিছু খেলা হয় শ্রীলঙ্কাতে। ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিড় আয়োজকও পাকিস্তান। এবারও নিরাপত্তার অজুহাতে পাকিস্তানে খেলতে যেতে চায় না ভারত। তাই আলোচনায় আবারও হাইব্রিড মডেল। তবে এই সিস্টেমে প্রস্তুত নয় পাকিস্তান- এমনটাই জানিয়েছেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি।
রাজনৈতিক বৈরিতার কারণে গত ১৬ বছর ধরে পাকিস্তান সফর করেনি ভারতীয় ক্রিকেট দল। শুধু তা-ই নয়, ২০১৩ সালের পর থেকে নিজেদের মধ্যে কোনো দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলেনি দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। এই সময়ে লড়াই হয়েছে কেবল আইসিসি টুর্নামেন্ট কিংবা এশিয়া কাপে।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ পরিদর্শনকালে পিসিবি চেয়ারম্যান বলেন, গত দুই মাস ধরে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে যে, পাকিস্তান সফর করবে না ভারত। এনিয়ে আমি আমার দলের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। তাদের (ভারত) কোনো আপত্তি থাকলে সেটা লিখিত আকারে দিতে হবে। এখন পর্যন্ত হাইব্রিড মডেল নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি এবং আমরা সেটি মানতে প্রস্তুত নই। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এটি নিয়ে খবর প্রকাশ করছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে পিসিবির কাছে কোনো বার্তা পৌঁছায়নি।
নাকভি মনে করেন, অতীতে ভারতের প্রতি ‘দারুণ উদারতা’ দেখিয়েছে পাকিস্তান। ভারত এশিয়া কাপ খেলতে পাকিস্তান না গেলেও পাকিস্তান ঠিকই ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে গিয়েছে। তাই খেলাধুলায় রাজনীতিকে না জড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
পিসিবি চেয়ারম্যান বলেন, যদি ভারতের কাছ থেকে চিঠি পাই, তাহলে সেটা নিয়ে সরকারের কাছে যেতে হবে আমাকে এবং তাদের সিদ্ধান্ত মানতে হবে। পাকিস্তান অতীতে অসাধারণ উদারতা দেখিয়েছে ভারতকে। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, তারা যেন বরাবরের মতো আমাদের কাছ থেকে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণের প্রত্যাশা না করে।
তিনি আরও বলেন, যদি তারা আসতে অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে ভবিষ্যতে কোনো টুর্নামেন্ট খেলতে পাকিস্তান ভারতে যাবে কি না, সে বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। পিসিবি কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না। ক্রিকেটকে রাজনীতিমুক্ত রাখা উচিত। কোনো খেলাকেই রাজনীতির সঙ্গে মেশানো উচিত নয়। কোনো দেশের সঙ্গে যদি সম্পর্ক ভালো না থাকে, তাহলে সেটা ভিন্ন বিষয়। কিন্তু খেলাধুলায় রাজনীতিকে জড়ানো উচিত।
এদিকে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চে অনুষ্ঠিত হবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। আট দলের এই টুর্নামেন্টে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবেই মাঠে নামবে স্বাগতিক পাকিস্তান।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে সবশেষ অনুষ্ঠিত হয়েছিল আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। সেবার ফাইনালে ভারতকে ১৮০ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল পাকিস্তান।