ঢাকা
২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
রাত ৩:৩৬
logo
প্রকাশিত : জুলাই ১৩, ২০২৪
আপডেট: জুলাই ১৩, ২০২৪
প্রকাশিত : জুলাই ১৩, ২০২৪

চরম বর্বরতা, কুকুর লেলিয়ে প্রতিবন্ধী ফিলিস্তিনিকে হত্যা করল ইসরায়েলি সেনারা!

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে আগ্রাসন চালাচ্ছে ইহুদিবাদী ইসরায়েল।

টানা নয় মাসের বেশি সময় ধরে ওই উপত্যকায় নৃশংসতা দেখিয়ে যাচ্ছে ইহুদিবাদী সেনারা।

এবার প্রকাশ্যে এল ইসরায়েলি সেনাদের আরেকটি বর্বরতার ঘটনা। গাজার সুজাইয়াতে ইহুদিবাদী সেনারা কুকুর লেলিয়ে এক প্রতিবন্ধী যুবককে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। জানা গেছে, ওই প্রতিবন্ধী যুবক কথাও বলতে পারতো না।

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডেল ইস্ট আই শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২৪ বছর বয়সী ওই যুবকের নাম মুহাম্মদ। তিনি তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই বাড়িতে থাকতেন। ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত ছিলেন ওই যুবক।

মুহাম্মদের মা নাবিলা আহমেদ সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, গত ২৭ জুন থেকে সুজাইয়াতে দখলদার ইসরায়েলের সেনারা ব্যাপক হামলা চালায়। এ সময় নিজেদের বাড়িতেই লুকিয়ে ছিলেন তারা। কিন্তু একদিন তাদের বাড়িতে এসে হানা দেয় ইসরায়েলি সেনারা। এসেই প্রথমে একটি কুকুরকে বাড়ির ভেতর ছেড়ে দেয়। ওই কুকুরটি এসে অবুঝ মুহাম্মদকে কামড়ে ধরে ছিন্নভিন্ন করে দেয়।

প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও মুহাম্মদকে ছেড়ে দেওয়া হয়নি। এর বদলে বাড়ি থেকে সবাইকে বের করে দিয়ে তাকে আলাদা একটি রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই সময় সেই রুম থেকে প্রচণ্ড চিৎকার করছিল মুহাম্মদ। চিৎকার ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাননি তার মা।

দখলদার ইসরায়েলিরা সুজাইয়াত থেকে চলে যাওয়ার পর গত বুধবার মুহাম্মদের পরিবার দ্রুত তাদের বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে দেখতে পান বাড়িতে পড়ে আছে মুহাম্মদের গলিত মরদেহ। এছাড়া তারা প্রত্যক্ষ করেন তার মুখমণ্ডল খাচ্ছিল পোকামাকড়।

মুহাম্মদের মা নাবিলা আহমেদ বলেছেন, “তার চিৎকার এবং কুকুর থেকে ছাড়া পাওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টার যে চিত্র আমি অনুধাবন করেছি তা ভুলতে পারছি না।”

মুহাম্মদ এতটাই অবুঝ ছিল যে তাকে খাইয়ে দিতে হতো। এমনকি তার ডায়াপার তার মাকে পরিবর্তন করে দিতে হতো।

নাবিলা বলেছেন, “সে ছিল এক বছরের শিশুর মতো। আমি তাকে খাইয়ে দিতাম। ডায়াপার পরিবর্তন করে দিতাম। তার সঙ্গে তারা কী করেছে এবং কীভাবে তাকে হত্যা করেছে, তা ভাবতেও পারছি না।”

মুহাম্মদের ৭১ বছর বয়সী মা জানিয়েছেন, ইসরায়েলিদের হামলার সময় তারা বাড়িতে ১৬ জন ছিলেন। যার মধ্যে তার দুই ছেলে, তাদের স্ত্রী ও সন্তানেরা ছিল। ইসরায়েলিদের ছোড়া বোমা যেন গায়ে আঘাত না হানে সেজন্য শিশুরা বাথরুমে অবস্থান করছিল। কিন্তু মুহাম্মদকে ঘরের ভেতরই রেখেছিলেন তারা। ফলে কুকুরটি প্রবেশ করে তাকে প্রথমে কামড়ে ধরে।

তার মা বলেছেন, “কুকুরটি তার বুকে কামড় দেয়। এরপর হাত কামড়ে ধরে সেটি ছিন্নভিন্ন করতে থাকে। মুহাম্মদ চিৎকার করছিল আর নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছিল। ওই সময় তার শরীর থেকে রক্ত ঝরছিল।”

মুহাম্মদ কথা বলতে না পারলেও কুকুরের হামলার সময় ভয়ে চিৎকার করতে করতে সে বলে ফেলে, “এই, হয়েছে।”

“আমি জানি না কীভাবে সে এই বাক্য উচ্চারণ করল। আমরা কখনও তাকে কথা বলতে শুনিনি,” বলেন তার মা।

কুকুর যখন হামলা করে তখন তিনি ইসরায়েলি সেনাদের বোঝাতে চেষ্টা করেন তার ছেলে প্রতিবন্ধী। একটা সময় কুকুরটিকে ছাড়ায় তারা। কিন্তু মুহাম্মদকে নিয়ে যাওয়া হয় আলাদা রুমে। তার মা তাকে ছেড়ে দিতে বললেও দেওয়া হয়নি। এর বদলে ওই রুমে একজন চিকিৎসক প্রবেশ করে তাকে চেতনাশক প্রয়োগ করে। এরপর আর মুহাম্মদের কোনও কথা বা চিৎকার শুনতে পাওয়া যায়নি।

তার মা জানিয়েছেন, এক সৈন্যকে তিনি জিজ্ঞেস করেন মুহাম্মদ কোথায়। জবাবে সে বলে ‘মুহাম্মদ আর নেই।’

এরপর ওই বাড়ির সবাইকে বের হয়ে যেতে বাধ্য করে ইসরায়েলি সেনারা। থেকে যায় শুধু মুহাম্মদ। সাতদিন পর দখলদার ইসরায়েলিরা যখন এলাকাটি ছেড়ে চলে যায় তখন তারা ফিরে আসেন। এসে দেখেন- মুহাম্মদের গলিত মরদেহ পড়ে আছে। সূত্র: মিডেল ইস্ট আই

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram