ঢাকা
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
রাত ৯:০২
logo
প্রকাশিত : জুলাই ১৩, ২০২৪

পলিথিনের কারণে জলাবদ্ধতা, হুমকির মুখে পরিবেশ

মুদি দোকান থেকে শুরু করে শপিংমল—সবখানেই পলিথিনের ব্যবহার বাড়ছে। নিষিদ্ধ হলেও কোনোভাবেই এর ব্যবহার থামছে না। পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে আইন থাকলেও তার প্রয়োগ নেই। দেদারছে হচ্ছে পলিথিন উৎপাদন ও ব্যবহার।

এদিকে, খুলনা নগরীতে ড্রেনে পলিথিনের কারণে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে, সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। ড্রেনের মাধ্যমে এই পলিথিন নদীতে গিয়ে পড়ছে। দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। এতে মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এসব খাওয়ার কারণে মানুষের শরীরে ঢুকছে ক্যান্সারসহ নানা রোগের জীবাণু।

একসময় শিল্পনগরী খুলনায় পরিবেশবান্ধব পাটজাত পণ্যের ব্যবহার ছিল। তবে, পাটকলগুলো বন্ধ হওয়ায় সবাই নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন পলিথিনের ওপর।

পরিবেশ নিয়ে গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছেন, পলিথিনের ব্যবহার এভাবে বাড়তে থাকলে বিষাক্ত হয়ে উঠবে খুলনার পরিবেশ।

ঘর থেকে বের হলেই যেখানে-সেখানে পড়ে থাকতে দেখা যায় পরিবেশ দূষণকারী পলিথিন। বর্জ্য ফেলার নির্ধারিত স্থান ও ডাস্টবিনেও দেখা যায় পলিথিন আর পলিথিন। পরিবেশ নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংস্থা নানা উদ্যোগ নিলেও বন্ধ হয়নি পলিথিনের ব্যবহার। এক্ষেত্রে সরকার ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হস্তক্ষেপ আশা করছেন পরিবেশবাদীরা।

খুলনার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা জেসি আক্তার বলেন, সারাদেশে সবাই এখন পলিথিনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। এটি বন্ধ করতে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা করতে হবে।

মুদি দোকানি আব্দুল হালিম বলেন, পলিথিন ছাড়া কাস্টমারকে কিভাবে মালামাল দেবো? সরকার যদি এটার ব্যবহার বন্ধ করতে পারে, তাহলে আমরাও ব্যবহার করব না।

নগরীর দৌলতপুর, ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজার, গল্লামারি, চিত্রালি বাজার, নিউ মার্কেটসহ খুলনার সবকটি বাজারে বিক্রি হয় নিষিদ্ধ পলিথিন। এসব পলিথিন পাইকারি দরে কিনে আনা হয় বড় বাজার থেকে। খুলনার বিভিন্ন উপজেলাসহ আশপাশের কয়েকটি জেলায় পলিথিন পাঠানো হয় বড় বাজার থেকেই। বেশ কয়েকবার পরিবেশ অধিদপ্তরের সাঁড়াশি অভিযানে এই পলিথিন বাজারজাতকারীদের আইনের আওতায় আনলেও বর্তমানে থেমে নেই রমরমা বাণিজ্য।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বিভিন্ন আকারের এই পলিথিন ঢাকা থেকে কুরিয়ার ও গাড়িযোগে খুলনায় আসে। বড় বাজারের শাহাদাত, গোবিন্দ ও জাহাঙ্গীরসহ বেশ কয়েকজন পাইকারি ব্যবসায়ী বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে এই ব্যবসা করছেন।

অভিযোগ আছে, পলিথিন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সদস্যদের নামে মাসোহারা নেন ফোরকান নামের এক ব্যক্তি। বড় বাজার সংলগ্ন খানজাহান আলী হকার্স মার্কেটের ভেতরে বেশ কয়েকটি দোকানে গোপনে চলে পলিথিন বেচাকেনা। এছাড়া, বড় বাজারের পেছনের পাশ তথা নদীর কিনারায় কয়েকটি দোকানে পলিথিনের পাইকারি দোকান রয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

বড় বাজারের এক পলিথিন ব্যবসায়ী এ প্রতিবেদককে বলেন, পলিথিন শুধু খুলনায় বিক্রি হয় না। এর ব্যবহার ঢাকাসহ সারাদেশেই হয়। সরকারের উচিত পলিথিনের বিকল্প হিসেবে কিছু তৈরি করা।

পলিথিন পচনশীল নয়। এটি দীর্ঘদিন অপরিবর্তিত ও অবিকৃত থেকে মাটি ও পানিকে দূষিত করে। পলিথিন মাটির উর্বরতা কমায় ও মাটির গুণাগুণ পরিবর্তন করে ফেলে। পলিথিন পোড়ালে এর উপাদান পলিভিনাইল ক্লোরাইড পুড়ে কার্বন মনোক্সাইড উৎপন্ন হয়ে বাতাসকে দূষিত করে। পলিথিনের ব্যাগ ও অন্যান্য জিনিস শহরের পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।

পলিথিন তৈরির চেয়েও বেশি ক্ষতিকর হচ্ছে পুরনো পলিথিন পুড়িয়ে এর থেকে নতুন পলিথিন বা প্লাস্টিক সামগ্রী তৈরী করা। ব্যবহারের পর ফেলে দেওয়া পুরনো পলিথিন বা পানির বোতল কুড়িয়ে এনে তা গলিয়ে আবারও বানানো হচ্ছে নতুন ব্যাগ। এতে পরিবেশ আরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের তথ্য মতে, খুলনায় নগরীর লবণচরা, রুপসাসহ কয়েকটি স্থানে পুরাতন পলিথিন পুড়িয়ে নতুন বানানো হয়।

পরিবেশ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, পুরনো পলিথিন নতুন রূপে তৈরির কারখানা কিংবা প্রতিষ্ঠানের কোনো লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। পলিথিন পোড়ানো কারখানার তথ্য পেলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেবো।

তিনি আরো বলেন, পলিথিন বহু বছর একইভাবে থাকে। ফলে, কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতি হয়। সবার সচেতন হওয়া উচিত।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram