কোটাবিরোধী আন্দোলনে হঠাৎ করেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে রোববার রাতে। এদিন বিকাল থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা শুরু হয় মুক্তিযোদ্ধা এবং রাজাকার ইস্যু নিয়ে। সরকারপ্রধানের মন্তব্যের প্রতিবাদ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ (ঢাবি) অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও নিজেদের রাজাকার ঘোষণা করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার-রাজাকার’, ‘কে বলেছে কে বলেছে, সরকার-সরকার’, ‘রাজাকার আসছে, রাজপথ কাঁপছে’, ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’-সহ বিভিন্ন স্লোগান।
বিভিন্ন ক্যাম্পাসের এ উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যে এবার বিক্ষোভকারীদের নিয়ে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বিক্ষোভের স্লোগানের সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভেরিফায়েড আইডি থেকে রোববার রাত ১২ টা ১৫ মিনিটে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি।
স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৫ শে মার্চ ছাত্র শিক্ষকদেরকে গণহত্যা করেছে রাজাকাররা, সেই রাজাকারের পক্ষে রাজাকারের সন্তান বলে স্লোগান দিতে লজ্জা করে না?’
এরপরে রাত ১২টা ৫৪ মিনিটে একটি ছবি পোস্ট করেন তিনি। ছবির ক্যাপশনে লিখেন, ‘তুমি কে? আমি কে? বাঙালি, বাঙালি। তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা।’
পরবর্তীতে রাত ১টা ১৫ মিনিটে তিনি আরও একটি ছবিসহ পোস্ট শেয়ার করেন। ছবির ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার। তোরা যারা রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়।’
এদিকে ঘটনার সূত্রপাত রোববার বিকালে গণভবনে চীন সফর উপলক্ষে আয়োজিত প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের পর থেকে। যদিও কয়েক দিন ধরে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে রাজপথ উত্তাল করে রেখেছিলেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? তাদের নাতিপুতিরা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা পাবে? এটা আমার দেশবাসীর কাছে প্রশ্ন। তাদের অপরাধটা কী? নিজের জীবন বাজি রেখে, নিজের পরিবার সব ফেলে যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে, দিন-রাত খেয়ে না খেয়ে, কাদামাটি পেরিয়ে, ঝড়বৃষ্টি সব মোকাবিলা করে যুদ্ধ করে বিজয় এনে দিয়েছে। বিজয় এনে দিয়েছে বলেই তো আজ সবাই উচ্চপদে আসীন। আজ গলা বাড়িয়ে কথা বলতে পারছে। তা না হলে পাকিস্তানিদের বুটের লাথি খেয়ে থাকতে হতো।’