প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনে (পিএসসি) গিয়ে গ্রেফতারকৃত ও সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করতে নমুনা সংগ্রহ করেছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার সিআইডির একটি প্রতিনিধিদল পিএসসিতে গিয়ে ফিঙ্গার প্রিন্ট, পায়ের ছাপসহ বিভিন্ন ধরনের নমুনা সংগ্রহ করেন। প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে গ্রেফতার ১৭ জনের সবাই তাদের দায় স্বীকার। এর মধ্যে পিএসসির ছয় জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। এছাড়া মামলায় এজাহারভুক্ত ১৪ জনসহ সন্দেহভাজন অন্তত ৭৪ জন আসামিকে গ্রেফতার করতে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে অভিযান চলছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের সুবিধা নিয়ে পাশ করা এবং চাকরি পাওয়া ক্যাডারদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের পর সুবিধাভোগী অনেক কর্মকর্তা আতঙ্কে রয়েছেন। প্রশ্নপত্র ফাঁস আগে থেকেই হয়ে আসছে। তবে ২০০২ সালে ২৪তম ব্যাচ থেকে ব্যাপক হারে শুরু হয় প্রশ্ন ফাঁস। সে সময় একটা বিশেষ জায়গা থেকে তালিকা আসত। তালিকায় থাকা সবাই পাশ করত। এছাড়া আবেদ আলী চক্র, পিএসসির সাবেক মেম্বার মাহফুজুর রহমানের চক্র ব্যাপক হারে প্রশ্ন ফাঁস করে দেশব্যাপী অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করত। ফাঁস হওয়া প্রশ্নে বিসিএস কর্মকর্তা হয়ে অনেকে সরকারের সব জায়গায় পদায়ন রয়েছে তাদের। একাধিক সংস্থা পর্যালোচনা করে দেখেছেন যে, ২০ ভাগের বেশি প্রশ্ন ফাঁসের সুবিধাভোগী ঢুকে পড়েছে।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দুর্নীতি, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা এ কর্মকর্তারাই বেশি জড়িত। তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। দুর্নীতি ছাড়া অন্যকিছু তারা বোঝেন না। সিআইডির পাশাপাশি একাধিক সংস্থা অনুসন্ধান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। অনুসন্ধানে এ ধরনের তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলেন, ফাঁস হওয়া প্রশ্নে যারা বিসিএস ক্যাডারসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ পেয়েছেন, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে এসব দুর্নীতিবাজকে সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা উচিত।
সিআইডির প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, প্রশ্ন ফাঁসে যারাই জড়িত থাকুক, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন সিআইডির প্রধান।