‘আমার ছেলেকে কেন হত্যা করেছে? আমার ছেলেকে কি ওরা ফিরিয়ে দিতে পারবে? আমার সঙ্গে কেন এমন হলো? বিচার কার কাছে চাইবো, কোথায় দেবো? যারা হত্যা করেছে তারাতো বিচার করবে না। আমি আল্লাহর কাছেই বিচার দিয়েছি। একদিন তাদের বিচার হবেই।’
কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে গুলিতে নিহত মোনায়েল আহমেদ ইমরানের (১৬) মা ইয়াছমিন আক্তার। শোকে পাথর হয়ে গেছেন তিনি। এখন কান্নাও আসছে না ঠিকমতো।
তিনি বলেন, ‘আমি ছেলেকে বড় আলেম বানাতে চেয়েছিলাম। সে সবসময় বলতো আম্মা আমি মাওলানা হয়ে মা-খালাদের জানাজা পড়াবো। কিন্তু আজ কি হয়ে গেলো। আল্লাহ হয়তো আমার ছেলেকে শহীদ হিসেবেই কবুল করেছেন। আমি গর্বিত যে আমি একজন শহীদের মা। কিন্তু আমার অন্য ছেলে মেয়েদের কান্না থামাতে পারছি না।’
ইয়াছমিন আক্তার বলেন, ‘আমার ছেলের গায়ে সাদা গেঞ্জি ছিল। সেটি রক্তে লাল হয়ে গেছে। আমাদের দেশের মানুষের চাকরি নেই। অথচ এখানে বাইরের দেশের মানুষ এসে চাকরি করছে। আমাদের দেশের মানুষ লেখাপড়া করে বিদেশে গিয়ে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করছে। এ কেমন কথা?’
রশীদ জানান, লাখাই উপজেলার সদর ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের বাসিন্দা ছোয়াব মিয়ার ছেলে মোনায়েল আহমেদ ইমরান কোরআনে হাফেজ ছিল। সে স্থানীয় জিরুন্ডা মানপুর তোফাইলিয়া ফাজিল মাদরাসায় অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। ২ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে সে সবার ছোট। পরিবারের সবাই মিলে নারায়ণগঞ্জের সাহেবপাড়া এলাকায় বসবাস করতো। সেখানে তার বাবা ছোট একটি ব্যবসা করেন।
তিনি বলেন, ২১ জুলাই বাসার বাইরে একটি দোকান থেকে কোমল পানীয় নিয়ে আসার সময় তার পেছন দিক থেকে একটি গুলি শরীরে ঢুকে বুক দিয়ে বের হয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে তার মা-বাবা গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করেন। ২২ জুলাই তাকে লাখাই উপজেলার কামালপুর গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।