বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে স্বাভাবিকভাবেই এর প্রভাব পড়েছে প্রতিবেশি দেশ ভারতেও। এই ইস্যুতে এবার উত্তেজনার পারদ চড়লো দেশটির রাজনীতিতে। বাংলাদেশের মতো ভারতেও একই পরিস্থিতি হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন কংগ্রেস নেতা সালমান খুরশিদ। তার এমন মন্তব্যকে ঘিরে তোলপাড় চলছে দেশটির রাজনীতিতে।
ভারতের সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিযোগ, কাশ্মির ও দিল্লিতে নির্যাতন নিপীড়নকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। ফলে যেকোনো সময় বাংলাদেশের মতো পরিস্থিতি হতে পারে।
সালমান খুরশিদের এমন মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিজেপির নেতারা। অভিযোগ করে বলছেন, নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চায় কংগ্রেস।
জানা গেছে, সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে ভারতের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা সালমান খুরশিদ সতর্ক করে বলেন, বাংলাদেশের মতো পরিস্থিতি হতে পারে ভারতেও। এসময় কাশ্মিরে দমন-পীড়ন এবং ২০২০ সালে দিল্লির শাহিনবাগে নাগরিকত্ব আইনের বিরোধী আন্দোলনে পুলিশি হামলার কথা উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হতে পারে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে।
কংগ্রেস নেতা বলেন, বাংলাদেশে যা ঘটছে তা এখানেও ঘটতে পারে। কাশ্মীরের পরিস্থিতি খালি চোখে স্বাভাবিক মনে হতে পারে। কিন্তু আসলে কি তাই? সত্য হলো এমন অনেক কিছুই রয়েছে যা খালি চোখে দেখা যায় না। দিল্লির শাহিনবাগেও তেমন হয়েছে। সেখানেও দমন-পীড়ন চালানো হয় যেমনটি বাংলাদেশে চালানো হয়েছে।
সালমান খুরশিদের বক্তব্যের সাথে একাত্মতা জানিয়েছেন দেশটির অনেক নেতাই। পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রধান মেহবুবা মুফতি সতর্ক করে বলেন, হাসিনার পতন থেকে শিক্ষা নেয়া উচিৎ ভারতের রাজনীতিবিদদের।
পিডিপি প্রধান মেহবুবা মুফতি বলেন, যখন মূল্যস্ফীতি-বেকারত্ব-অনিয়মের মতো সমস্যাগুলো বিশাল আকার ধারণ করে তখন এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়। স্বৈরাচারের পতন হয়ই, এটা ভুলে গেলে চলবে না। দেশের পলিসি ও আইন জনগণের বিপক্ষে গেলে হাসিনার মতো পালিয়ে জীবন বাঁচাতে হবে। বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি থেকে এই শিক্ষাটা আমাদের নেয়া উচিৎ।
অন্যদিকে পাল্টা সমালোচনা আর ক্ষোভ জানিয়েছেন বিজেপিসহ কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন নেতারা। দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিতে চায় কংগ্রেস, এমন অভিযোগ করেছেন তারা।
বিজেপি নেতা অনুরাগ ঠাকুর বলেন, পর পর তিনবার হারার পর নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিতে চাইছে কংগ্রেস। নিজেদেরকে ক্ষমতায় বসাতে তারা যে কোনো কিছু করতে পারে। দলের নেতাদের মানসিকতা কেমন- তা বোঝা যায় এ ধরনের মন্তব্য দেখে।
আরেক বিজেপি নেতা সম্বিত পাত্র বলেন, যে অনুষ্ঠানে সালমান খুরশিদ এমন মন্তব্য করেছেন, সেখানে শশী থারুর থেকে শুরু করে অন্যান্য নেতারাও ছিলেন। তারাও এর সমর্থন করেন। তাহলে, ভেবে দেখুন তাদের চিন্তা-ভাবনা কোন ধরনের। ভারতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হোক, নরেন্দ্র মোদির ওপর হামলা হোক এটাই তারা চায় আসলে। রাহুল গান্ধী তো পার্লামেন্টেও এধরনের কথা বলেন।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার অসহযোগ আন্দোলনের মুখে গেলো ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।