বিদেশি অর্থায়নের প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার ১০টি প্রকল্প থেকে ৮ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন ওয়াসার পদত্যাগ করা ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান। প্রায় ১৫ বছর ধরে ওয়াসাকে পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা, সাবেক এই এমডি যুক্তরাষ্ট্রে ১৪টি বাড়ির মালিক।
পরিবারের সদস্যরাও সবাই থাকেন যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটির নাগরিকও তারা।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয় পরিচয় ছাড়া আর কোনও যোগ্যতাই ছিল না তাকসিম এ খানের। ওই পরিচয়ের জোরেই ৭ বার এমডি পদে নিয়োগ পান। যোগ্যদের দূরে সরিয়ে রেখে অযোগ্যদের দিয়েই কাজ করাতেন তিনি।
ওয়াসার একজন জানান, তাকসিমের লুটপাট দেখলে আপনারা অবাক হয়ে যাবেন। এমন এমন প্রকল্প আছে যেখানে কোনো কাজ নাই কিন্তু হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হচ্ছে। যদি কেউ মুখ খুলেন তাকে সাসপেন্ট অথবা চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হতো।
তার আমলে পানির দাম বেড়েছে ১৬ বার। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তাকসিম এ খানের বরখাস্তের দাবি ওঠে। প্রতিদিন হয় সভা-সমাবেশ।
ওয়াসার সাবেক এই এমডি অফিস করতেন না বললেই চলে। নিজের যেন উপস্থিত হতে না হয় সেজন্য চালু করেছিলেন ভার্চুয়াল অফিস। এমনকি পদত্যাগও করেছেন অনলাইনে।
দুদকের তথ্য অনুযায়ি দুর্নীতির বরপুত্র তাকসিম যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে ১৪টি বাড়ির মালিক।
ওয়াসার সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা জানান, বিদেশি প্রকল্পের শত শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন তাকসিম।
প্রকৌশলী ডক্টর গোলাম মোস্তফা বলেন, “একটা একটা প্রজেক্টে ৩-৪ হাজার কোটি টাকা। তাতে ১০টি প্রজেক্টে ৪০ হাজার কোটি টাকা। উনি শুধু উপর মহলে যোগাযোগ করতেন আর উনি মনে করতেন, তিনি যা বলবেন সেটাই হবে। কাজেই ওয়াসা বোর্ডের যে দায়িত্ব সেই বোর্ড দায়িত্ব পালন করতে পারেনি বলেই এই অবস্থা হয়েছে।”
দেশে না বিদেশে কোথায় অবস্থান করছেন তাকসিম এ খান, এ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধুম্রজাল। তাকে বিচারের আওতায় এনে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনা সম্ভব বলে মনে করে প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা।
ওয়াসার সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা বলেন, “তাকসিম সাহেব ওয়াসাকে নিজের ব্যক্তিগত সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করেছেন।”