বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসে অসুস্থ হওয়া স্কুলছাত্র মাহিম মারা গেছে। কয়েকদিন অসুস্থ থাকার পর মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সকাল ৭টার দিকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রক্তবমি আর শ্বাসকষ্টে মারা যায় সে। বিকালে গ্রামের বাড়িতে তাকে দাফন করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকে গ্রামের ছেলেদের সঙ্গে মাঠে নেমেছিল দশম শ্রেণির ছাত্র মাহিম। গত ৪ আগস্ট কুমারখালীতে মিছিলে থাকা অবস্থায় পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের মধ্যে পড়ে গুরুতর আহত হয় মাহিম।
নিহত মাহিম হোসেন (১৭) কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের বামন পাড়া গ্রামের ইব্রাহিম হোসেনের বড় ছেলে। সে চাঁদট গ্রামের ইয়াকুব আহমদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
নিহতের বাবা ইব্রাহিম হোসেন জানান, গ্রামের ছেলেদের সঙ্গে তার ছেলে আন্দোলন করেছে। উপজেলা সমন্বয়করা তার সঙ্গে ছিল। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে মামলাও তুলে নেওয়া হয়েছিল।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রথম থেকেই অংশগ্রহণ করে আসছিল মাহিম হোসেন। ৪ আগস্ট সঙ্গীদের ডাকে সাড়া দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে যোগ দিতে খোকসা উপজেলা সদরে যায়। সেখানে পুলিশের বাধার মুখে সঙ্গীদের ছেড়ে কুষ্টিয়ার উদ্দেশে বাসে ওঠে। পাশের উপজেলা কুমারখালীতে গিয়ে বাস থেকে নেমে সেখানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দেয় সে। সেখানে পুলিশের ছোড়া টিয়ারশেলের গ্যাসে মারাত্মকভাবে আহত হয় মাহিম। এতদিন চিকিৎসা চলছিল। মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রক্তবমি আর শ্বাসকষ্টে মারা যায় সে। পরে বিকালে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায় মাহিমের মরদেহ। ইয়াকুব আহমদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে চাঁদট কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রফিকুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা গেছে। তবে কী কারণে মারা গেছে সেটি বলতে পারছি না। ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যুর কারণ বলা সম্ভব না।
খোকসা থানা পুলিশের ওসি আননূর জায়েদ বলেন, শুনেছি একটা ছাত্র মারা গেছে। এবিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ জানাননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।