রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে গ্রেপ্তার করার জন্য মঙ্গোলিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউক্রেন। পুতিনের আসন্ন মঙ্গোলিয়া সফরকে সামনে রেখে এ আহ্বান জানানো হয় দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর প্রথমবারের মতো আইসিসিভুক্ত কোনো দেশে যাচ্ছেন পুতিন। আগামী মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) মঙ্গোলিয়া যাওয়ার কথা রয়েছে রুশ প্রেসিডেন্টের। খবর বিবিসির।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তারা আশা করছে, পুতিন যে একজন যুদ্ধাপরাধী সে বিষয়ে অবগত আছে মঙ্গোলিয়া। দেশটির প্রশাসনের প্রতি রুশ এ নেতাকে গ্রেপ্তারের আহ্বান জানিয়েছে ইউক্রেন। নেদারল্যান্ডসের হেগে আইসিসির সদর দপ্তরে কৌঁসুলিদের কাছে পুতিনকে হস্তান্তরের দাবিও তোলা হয়েছে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে।
রুশ প্রেসিডেন্টকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত করে আইসিসি বলেছে, যুদ্ধ শুরুর পর ইউক্রেন থেকে শিশুদের বেআইনিভাবে রাশিয়ায় সরিয়ে নেওয়া ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছেন পুতিন।
এদিকে আইসিসির মুখপাত্র ড. ফাদি এল-আবদুল্লাহ বিবিসিকে বলেন, ‘সদস্য দেশ হিসেবে আইসিসির বিধান মেনে চলতে দায়বদ্ধ মঙ্গোলিয়ার কর্মকর্তারা। তবে অপরিহার্যভাবে এর অর্থ এই নয় যে, অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতেই হবে।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘অবশ্যই পুতিনের মঙ্গোলিয়া সফরকে ঘিরে সতর্কতার সঙ্গে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে, সন্দেহভাজন কাউকে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা নেই আইসিসির। শুধু সদস্য দেশগুলোর মধ্যেই বিচারব্যবস্থার চর্চা করতে পারে এ আদালত।’
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এরপর দুই বছরের বেশি সময় ধরে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। এরই মধ্যে ইউক্রেনের শিশুদের অবৈধভাবে দেশটি থেকে সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আইসিসি।
যে চুক্তির মাধ্যমে আইসিসি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা রোম চুক্তি নামে পরিচিত। আইসিসির মুখপাত্র ড. ফাদি এল-আবদুল্লাহ বলেন, রোম চুক্তির নবম অধ্যায় অনুসারে, মঙ্গোলিয়াসহ সদস্য দেশগুলো আইসিসিকে সহযোগিতা করতে দায়বদ্ধ। তবে এ চুক্তিতে বলা হয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে গ্রেপ্তারের দায়বদ্ধতা থেকে সদস্য দেশকে ছাড় দেওয়া যেতে পারে। অন্য দেশের সঙ্গে চুক্তির বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন অথবা তৃতীয় কোনো দেশের ব্যক্তি বা সম্পদের কূটনীতিক নিরাপত্তা লঙ্ঘনের আশঙ্কা থাকলে এ ছাড় দেওয়া হয়।
এদিকে ক্রেমলিনও বলছে, রুশ রাষ্ট্রপ্রধানের এ সফর নিয়ে মোটেও উদ্বিগ্ন নয় তারা। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ মস্কোয় সাংবাদিকদের বলেন, ‘মঙ্গোলিয়ার অংশীদারদের সঙ্গে আমাদের চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে।’