গুম শব্দটিকে চিরদিনের মতো বিদায় করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আয়নাঘরের মতো কোনো নির্যাতনের ঘর যাতে তৈরি না হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। যারা গুমের সাথে জড়িত তাদের বিচার করা হবে।
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে বিশ্ব গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে শাহবাগে একটি অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, কোনো সরকারকে টিকিয়ে রাখতে যাতে আয়নাঘর তৈরি করা না হয় সেদিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সকলের মিলিত চেষ্টায় দোষীদের খুঁজে বের করতে হবে। একইদিনে অন্য একটি অনুষ্ঠানে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, গুম হওয়া প্রত্যেককে খুঁজে বের করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদিচ্ছার কোনো অভাব হবে না।
বন, পরিবেশ ও জলবায়ু উপদেষ্টা বলেন, আর যেন কেউ গুম না হয়, সেজন্য আমরা গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক চুক্তিতে অনুস্বাক্ষর করেছি। এর অর্থ হচ্ছে কেউ ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে, বিরুদ্ধমত দমন করতে যেন কোনোভাবে কাউকে গুম হতে না হয়, সেটি নিশ্চিত করা।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ বছরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হাতে কত মানুষ গুম হয়েছেন তা জানতে তদন্ত কমিশন গঠন করেছে সরকার। মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীকে সভাপতি করে গঠিত ৫ সদস্যের কমিটি গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কমিটির সদস্যরা হলেন- হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকার কর্মী নুর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মিজ নাবিলা ইদ্রিস এবং মানবাধিকার কর্মী সাজ্জাদ হোসেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা প্রয়োগকারী সংস্থা তথা বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), বিশেষ শাখা, গোয়েন্দা শাখা, আনসার ব্যাটালিয়ন, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), প্রতিরক্ষা বাহিনী, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), কোস্ট গার্ডসহ দেশের আইন প্রয়োগ ও বলবৎকারী কোনো সংস্থার কোনো সংস্থার কোনো সদস্য কর্তৃক জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান, তাদের শনাক্ত করা এবং কোনো পরিস্থিতিতে গুম হয়েছিল তা নির্ধারণ করতে হবে।
জোরপূর্বক গুম হওয়ার ঘটনাগুলোর বিবরণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করা এবং এ বিষয়ে সুপারিশ করতে হবে। গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান পাওয়া গেলে তাদের আত্মীয়স্বজনকে জানাতে হবে। গুম হওয়ার ঘটনা সর্ম্পকে অন্যকোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পরিচালিত তদন্তের তথ্য সংগ্রহ করা। তদন্ত কমিশনন আইন ১৯৫৬ অনুযায়ী তদন্তের পর তা ৪৫ কার্য দিবসের মধ্যে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করা।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, কমিশনের সভাপতি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারক এবং সদস্যরা হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকের মর্যাদা এবং অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন।