ইবি প্রতিনিধি: হল থেকে জিনিসপত্র আনতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক ছাত্রলীগ কর্মী। ভুক্তভোগী জাকি ইসলাম ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তাৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে উদ্ধার করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবি'র সমন্বয়করা। পরে তাকে নিরাপদে গাড়িতে তুলে দেওয়া হয়। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, জাকি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে থাকতো। সে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাতের অনুসারী ছিল। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা থাকাকালীন জাকিকে শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হতে দেখা যেত।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে সোমবার প্রথম জাকি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। তার নিজের এবং একই হলের আরো ২ পোস্টেড ইবি ছাত্রলীগ নেতার জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়া জন্য সে ক্যাম্পাসে আসে। যাবতীয় জিনিসপত্র ভ্যানে উঠিয়ে বের হওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের সাথে তার বাকবিতণ্ডা হয়৷ একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা তার উপর চড়াও হলে সে আতঙ্কিত হয়ে বঙ্গবন্ধু হল গেট থেকে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। পরে পুকুরপাড় হয়ে সাদ্দাম হোসেন হল সংলগ্ন ক্রিকেট মাঠের দিকে আসলে বিপরীত পাশ থেকে শিক্ষার্থীদের আরেকটি গ্রুপ তাকে ধরে ফেলে। এসময় তাকে চড় থাপ্পর ও কিল ঘুষি মারা হয়। ঘটনা জানার পরপরই তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে পৌঁছেন 'বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের' সমন্বয়করা। পরে বিষয়টির মীমাংসা করে জাকিকে নিরাপদে ক্যাম্পাসের বাইরে বের করে দেওয়া হয়।
শিক্ষার্থীরদের অভিযোগ, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে তারা বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। জোরপূর্বক প্রোগ্রামে নিয়ে যাওয়া এ বিভিন্নভাবে অত্যাচার করা হয়েছে। তাদের ইচ্ছার বাইরে কোনো শিক্ষার্থী কথা বলতে পারতো না। তাদেরকে সঙ্গ দিয়ে চুনোপুঁটিরা ক্ষমতার দাপট দেখিয়েছে।
ভুক্তভোগী জাকির ভাষ্য, হলে থাকতে হলে ছাত্রলীগ করতে হতো। আর তাই সেও ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িয়ে যায়। তবে ছাত্রলীগে তার কোন পদ-পদবী ছিলো না বলে জানায় সে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইট জানান, শিক্ষার্থীরা জাকিকে মারতে উদ্যত হলে সমন্বয়করা গিয়ে থামান এবং তাকে উদ্ধার করেন। পরে সমন্বয়কদের উপস্থিতিতে তাকে নিরাপদে ক্যাম্পাসের বাইরে বের করে গাড়িতে তুলে দেওয়া হয়।
এদিকে এই ঘটনার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। এসময় ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় ইতোপূর্বে যারা শিক্ষার্থীদেরকে হেনস্তা করেছে, অত্যাচার-নির্যাতন করেছে তাদেরকে হলে থাকতে দেওয়া হবে না বলে জানান তারা।