৩ ম্যাচের সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে স্কটল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। আগে ব্যাট করতে নেমে শন অ্যাবট, অ্যাডাম জাম্পা, জাভিয়ের বার্টলেটদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রান তোলে স্কটল্যান্ড। সহজ লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম ওভারেই অভিষিক্ত জেইক-ফ্রেজার ম্যাকগার্ক হারায় সফরকারীরা। তবে একপ্রান্তে চার-ছক্কার বৃষ্টিতে রীতিমতো তাণ্ডব চালান ট্রাভিস হেড। একের পর এক বাউন্ডারিতে পাওয়ারপ্লে’তে ৬ ওভারেই ১১৩ রান তুলে অজিরা। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে পাওয়ার প্লে’তে এটিই সর্বোচ্চ রান। আর তাতেই ৬২ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটের জয় তুলে নেয় মিচেল মার্শের দল।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) এডিনবরার গ্রেঞ্জ ক্রিকেট ক্লাব মাঠে স্কটল্যান্ডের দেয়া ১৫৫ রানের লক্ষ্য ৩ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৯.৪ ওভারেই তাড়া করে ফেলে অস্ট্রেলিয়া! আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১৫০ রানের বেশি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সবচেয়ে বেশি বল বাকি রেখে জয়ের রেকর্ড এখন এটাই। শুধু তাই নয় এই জয়ের পথে পাওয়ার প্লেতে বিশ্ব রেকর্ডও গড়েছে অস্ট্রেলিয়া। দলটি ৬ ওভারেই তুলেছে ১১৩ রান। আগের সর্বোচ্চ ছিল ১০২ রান।
আগে ব্যাটিংয়ে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে স্কটল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের সামনে কেউই বড় ইনিংস খেলতে না পারায় ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রান তোলে স্বাগতিকরা। স্কটিশদের হয়ে জর্জ মানজি ২৮, ম্যাথু ক্রস ২৭ এবং বেরিংটন করেছেন ২৩ রান। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অ্যাবট তিনটি, বার্টলেট ও জাম্পা দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। একটি করে উইকেট পেয়েছেন রাইলি মেরিডিথ ও ক্যামেরন গ্রিন।
লক্ষ্য তাড়ায় ইনিংসের প্রথম ওভারে ম্যাকগার্ক সাজঘরে ফিরলে খানিকটা ব্যাকফুটে পরে যায় সফরকারীরা। ডেভিড ওয়ার্নারের ফেলে যাওয়া জায়গায় স্কটিশদের বিপক্ষে অভিষেক হওয়ায় তরুণ ওপেনারকে ফিরিয়েছেন ব্রেন্ডন ম্যাকমালান। ডানহাতি এই পেসারের শর্ট অব লেংথ ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি ম্যাকগার্ক। যার ফলে মিড অনে থাকা চার্লি ক্যাসেলকে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয়েছে রানের খাতা খোলার আগেই।
তিনে নেমে চার মেরে রানের খাতা খুলেন অজি অধিনায়ক মার্শ। পরের গল্পটা কেবলই হেডের। সাম্প্রতিক সময়ে বিধ্বংসী ব্যাটার হিসেবে বিশ্ব জুড়ে খ্যাতি পাওয়া হেড শুরু থেকেই তাণ্ডব চালিয়েছেন। তিন চারে ব্র্যাড হোয়াইয়েলের করা ওভারে ১৩ রান এনেছেন। পরের ওভারে ম্যাকমালাকে বাঁহাতি ওপেনার মেরেছেন দুই ছক্কার সঙ্গে দুই চার। তৃতীয় ওভার থেকে এসেছে ২০ রান। ক্যাসেলের পরের ওভার থেকে মার্শ ও হেড মিলে এনেছেন ১৯ রান।
বোলার পরিবর্তন করলেও অজিদের ঝড় থামাতে পারছিলেন না স্কটল্যান্ডের অধিনায়ক রিচি বেরিংটন। পঞ্চম ওভারে বোলিংয়ে আসা জ্যাক জার্ভিসকে তুলোধুনো করেছেন মার্শ। তিন ছক্কা ও তিন চারে ৩০ রান তুলেছেন। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক পৌঁছে যান ১১ বলে ৩৯ রানে। পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে হোয়াইলের ওপর চড়াও হন হেড। সেই ওভারে থেকে ২৬ রান যোগ করে অস্ট্রেলিয়া। যার ফলে মাত্র একটি উইকেট হারিয়ে প্রথম ৬ ওভারে ১১৩ রান করে সফরকারী।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে পাওয়ার প্লেতে এটিই সর্বোচ্চ রান। অজিরা পেছনে ফেলেছে ২০২৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার ১০২ রানের রেকর্ডকে। প্রোটিয়াদের রেকর্ড ভাঙার আগে মাত্র ১৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন হেড। আউট হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে ২৫ বলে তুলেছেন ৮০ রান। যেখানে ৭৮ রানই হেড করেছেন বাউন্ডারিতে। হেড ফেরার আগে আউট হয়েছেন ৩৯ রানের ইনিংস খেলা মার্শও। এরপর ইংলিশের ১৩ বলে অপরাজত ২৭ এবং মার্কাস স্টইনিসের ৮ রানের কল্যাণে জয় নিশ্চিত হয় অস্ট্রেলিয়ার।