আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, শ্রমিকনেতা ও স্থানীয় রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে আশ্বাস পাওয়ায় ঢাকার আশুলিয়ার তৈরি পোশাক কারখানা আজ শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) খুলছে।
এর আগে, শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) ব্যাপক শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে আশুলিয়ার তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে চলমান অস্থিরতা নিয়ে বিজিএমইএর কার্যালয়ে দুই দফায় শিল্পমালিক, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, বিভিন্ন সংগঠনের শ্রমিকনেতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক হয় ।
বিজিএমইএর সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব, শ্রমিকনেতা মন্টু ঘোষ, নাজমা আক্তার প্রমুখ।
বৈঠক প্রসঙ্গে বিজিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব বলেন, ‘সব পক্ষই কারখানা সচল রাখার পক্ষে মত দিয়েছে। তারা বলেছে, শিল্প বন্ধ রাখা কোনোভাবে কাম্য নয়। উৎপাদন না হলে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ব্যবসাও অন্যত্র চলে যাওয়ার শঙ্কা থাকে।’
তিনি বলেন, শ্রমিকনেতারা সাধারণ শ্রমিকদের কাজে ফিরতে আহ্বান জানিয়েছেন। কোনো দাবি-দাওয়া থাকলে মালিকপক্ষকে লিখিতভাবে জানানোর কথা বলেছেন। অন্যদিকে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা বর্তমান পরিস্থিতিতে ঝুট ব্যবসা থেকে বিরত থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।
আশুলিয়ায় আল মুসলিম ও নাসা গ্রুপের শ্রমিকদের মধ্যে বেতন-ভাতা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। এই দুই গ্রুপের শ্রমিকেরা দাবি আদায়ে একাধিক দিন কর্মবিরতিও পালন করেন। এ বিষয়ে বিজিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব বলেন, ‘আমরা উভয় গ্রুপের মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা শ্রমিকদের পাওনা বুঝিয়ে দেয়ার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন।’
প্রসঙ্গত, গত দুই সপ্তাহ ধরে গাজীপুর ও আশুলিয়ার ওষুধ ও তৈরি পোশাকশিল্পে শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। তৈরি পোশাক কারখানার বিক্ষোভে বহিরাগত, ছাঁটাই করা ও কারখানার শ্রমিকদের অনেকেই অংশ নেন। তারা বিভিন্ন কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বেশ কয়েকটি কারখানায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। এ ছাড়া হামলায় আহত হন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য।
গত বৃহস্পতিবার গাজীপুরের পরিস্থিতির উন্নতি হলেও আশুলিয়ায় বিক্ষোভ হয়েছে। সকালে কয়েকটি কারখানায় হামলা ও ভাঙচুর করেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা। এতে অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন। দুপুরের পর অধিকাংশ কারখানা ছুটি দিয়ে দেয়া হয়। সব মিলিয়ে সেদিন ১২৯ তৈরি পোশাক কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হয়।