ঢাকা
২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সকাল ৬:১৬
logo
প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৪

টেন্ডার ছাড়াই ৯০ বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির অনুমতি দিয়েছিল শেখ হাসিনা সরকার

২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অনুমতি দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। দ্রুত উৎপাদনের কথা বলে দরপত্র ছাড়াই ৯০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির অনুমোদন পায় কয়েকটি কোম্পানি। এটাকে আইনী বৈধতা দিতে ২০১০ সালে প্রণীত হয় হয় দায়মুক্তি আইন; যা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইন নামে পরিচিত। সেখানে বলা হয়, ‘কোনো কার্য, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা , প্রদত্ত কোনো আদেশ বা নির্দেশের বৈধতা সম্পর্কে কোনো আদালতের নিকট প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না’।

মাত্র দুই বছরের জন্য এই আইন করা হলেও কয়েক দফা মেয়াদ বাড়িয়ে তা টিকিয়ে রাখা হয় পনেরো বছর। বিশেষ ক্ষমতা আইনের বাইরে সর্বনিম্ন ৩ বছর থেকে ২০ বছর পর্যন্ত করমুক্ত সুবিধা পেয়েছে কয়েকটি বিদ্যুৎ কোম্পানি। তিন বছরের চুক্তিতে থাকা রেন্টাল কেন্দ্রগুলোর কয়েকটি চলেছে বছরের পর বছর, সেগুলোর জন্য গুণতে হয়েছে বিশাল অঙ্কের ভাড়া।

জানা যায়, বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ৮০ শতাংশ প্ল্যান্ট ফ্যাক্টর বা সক্ষমতায় চলার কথা, যদিও বেশিরভাগই চলেছে ৬০ শতাংশের নিচে। দেশে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা সাড়ে ২৭ হাজার মেগাওয়াটের মতো। অথচ গড়ে উৎপাদন করা হয় ১৩ থেকে ১৪ হাজার মেগাওয়াট। তবে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে ক্যাপাসিটি চার্জ নিয়মিতই শোধ করেছে সরকার। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে এর পরিমাণ ছিল প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা। এক বছরে ক্যাপাসিটি চার্জ ৫৮ ভাগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার কোটি টাকায়।

সবচেয়ে বেশি ক্যাপাসিটি চার্জ পেয়েছে সামিট গ্রুপ। তাদের পেছনে সরকার ব্যয় করেছে ১০ হাজার ৬২৩ কোটি টাকা। এছাড়া, এগ্রিকো ৭ হাজার ৯৩২ কোটি, এরদা পাওয়ার ৭ হাজার ৫২৩ কোটি, ইউনাইটেড ৬ হাজার ৫৭৫ কোটি ও আরপিসিএলকে ৫ হাজার ১১৭ কোটি চার্জ দিয়েছে সরকার।

তাই দ্রুত সংকট চিহ্নিত করে দোষীদের শাস্তি ও ভবিষ্যতে অনিয়ম প্রতিরোধে কার্যকর নির্দেশনা দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা।

বিষয়টি নিয়ে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশনের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে আইন করা হয়েছিল সেটির মূল লক্ষ্যই ছিল লুটপাট ও তছরুপ করা। আইন দিয়ে তছরুপকে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। বৈধতা দেয়া হয়েছে। যারা আইনটি তৈরি করেছিল তারা অপরাধ করেছে। তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি এই আইন বাতিলের দাবি জানান তিনি।

ক্যাপাসিটি চার্জ ইস্যুতে তিনি বলেন, লুণ্ঠনমূলক ব্যয় বৃদ্ধি করে মুনাফা হাতিয়ে নিয়েছে আওয়ামী লীগাররা। তারপর সেই মুনাফা কই চলে গেছে? সেগুলো দেশের বাইরে পাচার করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জনগণের অর্থ উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিনিয়োগকারীদের সুযোগ দেয়ার জন্য আইনটি ব্যবহার করা হয়েছে। এতে যোগসাজশে আত্মসাতের সুযোগ তৈরি হয়েছে। ফলে বিদ্যুতের মূল্য জনগণকে অনেক বেশি দিতে হচ্ছে।

গত ১৬ বছরে কেবল ক্যাপাসিট চার্জ বাবদ যত টাকা দেয়া হয়েছে তা চারটি পদ্মা সেতু তৈরির খরচের চেয়েও বেশি। এসব ঘটনা খতিয়ে দেখে বিদ্যুৎখাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার তাগিদ দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা।

logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram