পাকিস্তানের করাচি বিমানবন্দরের বাইরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে মারা গেছে দুই জন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে আটজন। সংবাদসংস্থা এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, চীনা দূতাবাসের তরফে জানানো হয়েছে, বিস্ফোরণে যে দু'জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁরা দু'জনই চীনের নাগরিক। আহতদের মধ্যেও একজন চীনা নাগরিক রয়েছে।
পাকিস্তানের কাসিম বন্দরে চীনের অর্থায়নে যে বিদ্যুৎ প্রকল্প চলছে, তাতে যুক্ত চীনা নাগরিকদের কনভয়ে হামলা চালানো হয়েছে। চীনা দূতাবাস জানায় ওই প্রকৌশলীরা চীনের অর্থায়নে নির্মিত পোর্ট কাসিম পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে জড়িত। প্রতিষ্ঠানটি করাচির কাছে পোর্ট কাসিমে দুটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছে। বিদ্যুৎ প্রকল্পটি চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোরের একটি অংশ।
ইতিমধ্যে এই বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করে নিয়েছে বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। যে গোষ্ঠী বেলুচিস্তানকে স্বায়ত্তশাসনের দাবি জানিয়ে আসছে। আর মাঝেমধ্যেই তারা চীনা নাগরিকদের ‘টার্গেট’ করে থাকে। তাদের অভিযোগ, জাতিগত বেলুচরা বিদেশি বিনিয়োগের সুফল থেকে বঞ্চিত।
বিশেষত রোববার রাত ১১ টা নাগাদ (স্থানীয় সময় অনুযায়ী) যে বিস্ফোরণ ঘটেছে, সেটার তীব্রতা ছিল যথেষ্ট বেশি। ভিডিয়োয় দেখা গেছে যে দাউদাউ করে জ্বলছে একাধিক গাড়ি। আর তা থেকে গলগল করে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। পাকিস্তানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে করাচির বিভিন্ন প্রান্তে শব্দ শোনা গিয়েছে। কয়েক কিলোমিটার দূর থেকেও সেই বিস্ফোরণের আওয়াজ কানে এসেছে বলে দাবি একাধিক পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের।
সংবাদসংস্থা এপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) ডেপুটি ইনস্পেক্টর জেনারেল (ইস্ট) আফজর মাহেসর দাবি করেছেন যে অয়েল ট্যাঙ্কারের বিস্ফোরণের মতো কোনও ঘটনা ঘটেছে। ঠিক কী ঘটেছে, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে কিছুটা সময় লাগবে। সেইসঙ্গে ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় কয়েকজন পুলিশ অফিসারও আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন মাহেসর।
যদিও সংবাদমাধ্যম জিয়ো নিউজে সিন্ধু প্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জিয়াউল হাসান লঞ্জর দাবি করেছেন যে আইইডি বিস্ফোরণের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। যে ঘটনার দায় স্বীকার করে বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মির তরফে দাবি করা হয়েছে, করাচি বিমানবন্দর থেকে আসা উচ্চপর্যায়ের চীনা ইঞ্জিনিয়ার এবং বিনিয়োগকারীদের কনভয়ে হামলা চালানো হয়েছে।
আর এই ঘটনায় রীতিমতো ক্ষিপ্ত চীন। বেইজিংয়ের দূতাবাসের তরফে জানানো হয়েছে যে পূর্ণাঙ্গভাবে হামলার তদন্ত করা উচিত পাকিস্তানের। আর হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া উচিত। সেইসঙ্গে চীনা নাগরিক, প্রতিষ্ঠান এবং প্রকল্পের ক্ষেত্রে সুরক্ষা নিশ্চিত করার আবেদন জানিয়েছে বেইজিং।