কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি: কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় শীতকালীন আগাম সবজি চাষ করা কৃষকের ব্যাপক ক্ষতির আশংকায় রয়েছে। অনেক জমিতে পানি ওঠায় সবজি গাছ নষ্ট হয়েছে। মাঠের পর মাঠ সবজির ক্ষেত এখন পানির নিচে। গত মঙ্গলবার থেকে শনিবার পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে এ অবস্থা হয়েছে বলে জানা যায়।
গাজীপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম খান জানান, টানা বৃষ্টিতে শীতের আগাম সবজি চাষে হেম্পার হয়েছে। এতে শীতের সবজি চাষে ১৫/২০ দিন পিছিয়ে যেতে পারে।
উপজেলার কয়েকটি গ্রাম ঘুরে অন্তত ১০ জন কৃষকের খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনেক মাঠ পুরোটাই তলিয়ে গেছে। আগাম আবাদ করা সবজির ক্ষেত পানির নিচে থাকায় উৎপাদনে ধ্বস নামতে পারে বলে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকেরা।
কাপাসিয়া নবীপুর গ্রামের মহিবুর রহমান(৫২) বলেন, ৮ বিঘা জমিতে মরিচ, বেগুন, শসাসহ বিভিন্ন প্রকার সবজি আবাদ করছিলাম। আমার সবজি জমিতে ২ লাখ টাকা খরচ হইছিলো। সবকিছু ঠিক থাকলে ১০ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারতাম। টানা বৃষ্টিতে সব নষ্ট হয়ে গেছে।
আমরাইদ বাজার এলাকার মফিজ মিয়া (৫৫) জানান, আমি তিন বিঘা জমিতে চার হাজার 'বিজলি প্লাস ২০২০ জাতের' মরিচ লাগাইছিলাম, নষ্ট হয়ে গেছে। মরিচ ফসলে বীজ, চাষাবাদ, বাঁশ, সুতার খরচ ছিলো ৪৩ হাজার টাকা। আরো কাজের লোক এর খরচ হইছে। মরিচ হইলে ৩ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারতাম। তিনি বলেন, এখন একই জমিতে শসার আবাদ করেছি। তাও মাত্র কয়েকটি গাছ আছে। বেশিরভাগ ফসল নষ্ট হইছে। খরচ হইছিলো ১৯৫০০ টাকা।
লোহাদী গ্রামের মোস্তফা মিয়া (৩২) জানান, প্রতি বছর শীতকালীন সবজি আবাদ করি। তাঁর ভাষ্য, গত বছর তিন বিঘা জমিতে আবাদ করে খরচ বাদে লাভ করেছিলেন ৪ লাখ টাকা। এবারও লাভের আশায় ফুলকপি, টমেটো, গাজরসহ শীতকালীন সবজির জন্য জমি প্রস্তুত করেছি। প্রায় ৩ বিঘা জমিতে লাগানোর প্রস্তুতি নিয়েছি। তবে অসময়ের বৃষ্টি কারণে বীজ বপন করতে পারছিনা।
রায়েদ হাইলজোর গ্রামের সাইফুল ইসলাম, ভুলেশ্বর গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম, আমরাইদ গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, শীতকালীন সবজি আবাদ করে ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
কাপাসিয়া উপজেলা কৃষি উপ সহকারী অফিসার আবুল কালাম বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের ফসল ভিজিট করতে আমি নবীপূর গ্রামে অবস্থান করছি।
কাপাসিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার সুমন কুমার বশাক বলেন, কাপাসিয়ায় বেশিরভাগ জমি উঁচু। পানি জমে থাকেনা। তবে টানা বৃষ্টিতে নীচু জমিতে আবাদি মরিচ চাষীদের কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। উপসহকারী কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।